ইউরোপ বাংলা ডেস্কঃ নতুন বছর ২০২১ সালে করোনা মহামারী পর্তুগালের জন্য খুব ভয়ঙ্কর একটা পরিস্থিতি তৈরি করেছিল। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকেই সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকে এবং জানুয়ারির মাঝামাঝিতে এক দিনে সংক্রমনের সংখ্যা ১০ হাজারের উপরে উঠতে থাকে এবং মাসের শেষ সপ্তাহের প্রথম দিকে একদিনে সংক্রমণ ১৬ হাজার অতিক্রম করে যা প্রথম ধাপে আঘাতে এক মাসের সংক্রমনের সমতুল্য।
মৃত্যুর সংখ্যা প্রতিদিন ২০০ এরও বেশি অতিক্রম করতে থাকে।হাসপাতালগুলো করোনা রোগীতে পরিপূর্ণ হয়ে যায় সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি ধারণ করে যে বিষয়টি বিশ্বের মানুষ ইতিপূর্বে ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য তা ইতিপূর্বে দেখেছে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র পুরনো সক্ষমতায় পৌঁছে যাওয়া এবং তাই ঘটেছিল পর্তুগালের হাসপাতাল গুলোতে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ যেমন অস্ট্রিয়া নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছে পর্তুগালের রোগীদের জন্য তাছাড়া জার্মানি সরঞ্জামসহ মেডিকেল টিম পাঠিয়েছে। যদিও করণা মহামারীর শুরু হওয়ার পর পর্তুগাল পূর্বের সক্ষমতার দ্বিগুণ সংখ্যক নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র বাড়িয়েছিল। তবে রোগীর ঢল তা সংকুলন করতে অসমর্থ হয়।
পরিস্থিতি বিবেচনায় পর্তুগিজ সরকার কঠোর জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে, বলতে গেলে সকল সরাসরি উপস্থিত সংক্রান্ত সকল ধরনের সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। খুব করাকরির মাঝে জরুরি অবস্থা চলছে নিতান্তই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কারো ঘর থেকে বের হওয়ার উপক্রম নেই। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থানে আছেন, প্রয়োজনে ঘোরাফেরা করতে গিয়ে অনেকেই জরিমানার সম্মুখীন হয়েছেন। তবে সকল জরুরী সেবা গুলো চালু রয়েছে, অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম, রেস্টুরেন্টে হোম ডেলিভারি ও টেক ওয়ে, ফার্মেসি, ক্লিনিক, সুপার মার্কেট সহ জরুরী খাদ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে।
বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে স্পেনের সাথে নৌ এবং স্থল সীমান্ত যোগাযোগ, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এখানে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিক এবং স্থানীয় নাগরিকদের বাইরে কাউকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। বন্ধ রয়েছে যুক্তরাজ্য। এবং ব্রাজিলের মধ্যে বিমান যোগাযোগ। এক্ষেত্রে অবশ্য বাংলাদেশে যেতে এবং ফিরতে পারছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
তবে সেই ভয়াবহ পরিস্থিতি পর্তুগাল সরকারের তড়িৎ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কারণে লাঘব করা সম্ভব হয়েছে কেননা প্রথমবারের মত ২২শে ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালের সর্বনিম্ন করোণা সংক্রমণ রেকর্ড করা হয়েছে ৫৪৯ জন এবং মৃত্যু ৬১ জন যা গত ২০২০ সালের অক্টোবর পর সর্বনিম্ন সংক্রমণের সংখ্যা। পর্তুগালে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে সর্বমোট আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৭ লক্ষ ৯৮ হাজার ৭৪ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১৬ হাজার ২৩ জন। তবে ৭ লাখ ১ হাজার ৪ শত ৯ জন রোগমুক্ত হয়েছেন বর্তমানে ৮০ হাজার ৬৪২ জন আক্রান্ত অবস্থায় আছেন।
পর্তুগালের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছেন হাসপাতালে রোগীদের চাপ ধীরে ধীরে কমছে তবে কিছুটা সময় লাগবে, অস্থায়ী যেসকল হাসপাতাল ছিল তা খালি করা হয়েছে, বর্তমানে আই সি ইউ রোগী আছেন ৬২৭ জন যা গতকালের থেকে ১১ জন কম তবে হাসপাতালে ভর্তি সংখ্যা বেড়েছে ৩,৩২২ জনজা গতকাল থেকে ৬ জন বেশি। আশা করা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই হাসপাতালে চাপ কমে আসবে ।