Friday, মার্চ ২৯, ২০২৪

বিনামূল্যে জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার প্রক্রিয়া (পর্ব-২)

ইউরোপ বাংলা স্পেশাল : পাসপোর্ট ও আইইএলটিএস সনদের পাশাপাশি আবেদনের জন্য আপনাকে কিছু প্রয়োজনীয় কাগজ প্রস্তুত রাখতে হবে। প্রথমেই স্নাতকসহ বিগত সকল একাডেমিক ডিগ্রীর সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্টের মূল কপি। এগুলো সব স্ক্যান করেও রাখতে পারেন। এরপরে যারা যারা এখনও গ্রেডিং সিস্টেমের আওতাভুক্ত হননি তাদের জন্য মিনিমাম পাসিং গ্রেড সংযুক্ত করতে হবে। স্টাডি প্ল্যানসহ মোটিভেশন লেটার। এটার মাধ্যমে আপনার মাস্টার্স কোর্সের প্ল্যানের সবকিছুই থাকবে।

২টি রিকমেন্ডেশন লেটার (যে বিষয়ে জার্মানিতে পড়তে যাওয়া হচ্ছে সে বিষয়ের ওপর শিক্ষার্থীর নিজের স্নাতক করা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের নিকট থেকে ১টি, আর আরেকটি ব্যাচেলর করা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের ডিনের কাছ থেকে)। জার্মানির ব্যাঙ্কে নিজের নামে একাউন্টে সিকিউরিটির মানির তথ্য। এছাড়াও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও কিছু কাগজপত্র দরকার হতে পারে। এর জন্য আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইট ভালো করে দেখে নিতে হবে তারা কি কি কাগজপত্র চায়। সকল কাগজপত্র যোগাড় করে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়, শিক্ষা বোর্ড বা বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রনালয়, এবং ঢাকার জার্মান এম্ব্যাসি থেকে সত্যায়ন করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে নোটারি করা যেতে পারে।

প্রথম পর্ব পড়কে ক্লিক করুন: বিনামূল্যে জার্মানিতে উচ্চশিক্ষার প্রক্রিয়া (পর্ব-১)

এরপরে আবেদনের জন্য সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হলো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করা। এর জন্য প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র আগে থেকেই স্ক্যান করে রাখতে হবে। তবে কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় হার্ড কপি চাইতে পারে। সেক্ষেত্রে ফেডেক্স বা ডিএইচএলের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানায় কুরিয়ার করতে হবে। এখানে কিছু খরচ করতে হবে। এছাড়াও ইউনি অ্যাসিস্টের মাধ্যমেও জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করা যায়। এক্ষেত্রে ইউনি অ্যাসিস্টের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে। এখানে আবেদনপত্রসহ সত্যায়িত বা নোটারী করা কাগজগুলোর এক সেট ইউনি অ্যাসিস্টের এর ঠিকানায় ডিএইচএল বা ফেডেক্স দিয়ে পাঠাতে হয়। এখানে বেশ ভালো পরিমাণ খরচ হয়ে যায়।

সব বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের নিয়ম কানুন এক রকম নয়। কিন্তু যে তথ্যগুলো প্রদান করতে হয় তা ঘুরে ফিরে প্রায়ই একই। তাই এক্ষেত্রে একটু সাবধানতার সঙ্গে আবেদন ফরম পূরণ করলে তেমন জটিলতার সম্মুখীন হতে হবে না। প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যানকপি আপলোডসহ যাবতীয় তথ্য প্রদান করলেই আবেদন সম্পন্ন হয়ে যাবে। এখানে কোনো রকম টাকাপয়সা খরচ হবে না, বরঞ্চ সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্ববিদ্যালয় আবেদনপত্র পেয়ে যাবে। এমনকি কৃতকার্য হলে অফার-লেটারটিও খুব কম সময়েই আপনার ইমেইলে চলে আসবে।

অফর লেটার পাওয়ার পর এবার জার্মানি এম্বাসির মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়ায় আপনাকে অগ্রসর হতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে বিষয়টি অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। জার্মান এম্বাসিতে এপায়নমেন্টের জন্য রেজিষ্ট্রেশন করলে ইন্টারভিউয়ের ডাক পেতে পেতে ১০ থেকে ১২ মাস লেগে যাচ্ছে। তাই এই সময় হিসাব করে অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজগুলো শেষ করে আগে ভাগেই রেজিষ্টেশন করে রাখা ভালো।

জার্মান এম্ব্যাসী থেকে ইন্টার্ভিউ ডেট দেওয়ার পূর্বে যাবতীয় কাগজপত্রের সফট-কপি চেয়ে আপনাকে ইমেইল করা হবে। এর ৭ দিনের মধ্যে ঐ মেইলের রিপ্লাইয়ে সব কাগজপত্র পাঠিয়ে দিতে হবে। দরকারি কাগজপত্রগুলো হলো- আবেদনকারির সম্প্রতি তোলা বায়োমেট্রিক্যাল পাসপোর্ট সাইজ ছবির ৩ কপি (৩ টি ছবি এক পেজে নিয়ে পিডিএফ করে পাঠানো যেতে পারে), শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরসহ সম্পূর্ণভাবে পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম, পাসপোর্ট কপি, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো ভর্তির অফার লেটার, স্নাতকসহ বিগত সকল একাডেমিক ডিগ্রীর সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট, আইইএলটিএস সনদ, ব্লক্ড অ্যাকাউন্টের প্রমাণপত্র, ৬ মাসের ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স, মোটিভেশন লেটার, সম্মতির ঘোষণাপত্র।

সবগুলো স্ক্যান করা ফাইলকে একসঙ্গে করে একটি ১০ মেগাবাইটের পিডিএফ ফাইল করে মেইল করতে হবে। কাগজপত্র ইমেইলের সাথে সাথেই ঐ দিনই ইমেইল অথবা ফোন করে ইন্টারভিউয়ের ডেট জানিয়ে দিতে পারে এম্বাসি। সাধারণত ইন্টারভিউয়ের দিন থেকে ২৫ কর্মদিবসের মধ্যেই ভিসা দিয়ে দেয়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে কমবেশি হতে পারে। পাসপোর্ট সংগ্রহের ইমেইল পাওয়ার পর ভিসা ইন্টারভিউয়ের সময়ে যে কাগজ দিয়েছিল, সেটা নিয়ে এম্ব্যাসিতে গেলেই ভিসা হাতে পাওয়া যাবে।

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা