ইউরোপ বাংলা এক্সক্লুসিভ
বিশ্বের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য এবং ধনী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি জার্মানি। তথ্য-প্রযুক্তি, শিক্ষাসহ প্রায় সবখাতেই এই দেশটি শুধু ইউরোপেই নয় পুরো বিশ্বে শীর্ষস্থানীয়দের তালিকায় রয়েছে। বিশেষ করে দেশটির শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত আধুনিক এবং যুগোপযোগী। দেশটিতে উচ্চশিক্ষার জন্য রয়েছে নামিদামী বিশ্ববিদ্যালয়। তাই উচ্চশিক্ষার জন্য স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের পছন্দের অন্যতম গন্তব্য এখন ইউরোপের সমৃদ্ধ দেশ জার্মানি। শিক্ষা ও গবেষণায় শূন্য টিউশন ফি ও শিক্ষাবৃত্তির সুবিধা। দেশটির পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পনেরশটিরও বেশি বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ দিয়ে আসছে। এগুলোর মধ্যে প্রকৌশল, কম্পিউটার বিজ্ঞান, ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা, এবং সাংস্কৃতিক অধ্যয়নের মতো অধিক চাহিদা সম্পন্ন কোর্সগুলোই প্রধান, যেখানে উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করা হয়।
বর্তমানে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মেধাবীসহ সব ধরনের শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার জন্য জার্মানিকে নির্দ্বিধায় বেছে নিচ্ছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও এদিক থেকে পিছিয়ে নেই। তবে নিয়ম কানুন না জানার কারনে অনেকেই এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। ইউরোপ বাংলার দুই পর্বের আয়োজনে এবার পাঠকদের জন্য থাকছে জার্মানিতে বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষার সকল আদ্যেপান্ত..
জার্মানির উচ্চশিক্ষার আবেদনের প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে দেশটিতে মাস্টার্স ও পিএইচডি সম্পর্কে সকল তথ্য। প্রথমেই নিশ্চিত হতে হবে, আপনার স্নাতক করা বিষয়ের উপর মাস্টার্স করার সুযোগ জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দিচ্ছে কিনা। আর এটা খুঁজতে আপনাকে জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইট অথবা কমুনিটি ওয়েবসাইট ডাড এর সরাপন্ন হতে হবে। বিনাখরচে পড়ার জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়টির শহরের প্রতিও নজর দেওয়া উচিত। স্বাভাবিক ভাবেই উন্নত শহরে চাকরির ব্যবস্থা সহজসাধ্য হয়ে থাকে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে রেস্ট্রিক্টেড ক্যাটাগরির কিছু কোর্স থাকে, যেগুলোতে ভর্তির আসন সংখ্যা থাকে সীমিত। এখানে সবচেয়ে সেরা প্রার্থীদের ভেতর থেকেই বাছাই করা হয়ে থাকে। আর কিছু থাকে নন-রেস্ট্রিক্টেড প্রোগ্রাম। এখানে তাদের ওয়েবসাইটে উল্লেখিত আবেদনের নূন্যতম যোগ্যতা পূরণ করলেই অফার-লেটার পাওয়া যায়। তাই বিশ্ববিদ্যালয় ও কোর্স নির্বাচনের সময় এই রেস্ট্রিক্টেড ও নন-রেস্ট্রিক্টেড বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।
পড়াশোনার খরচ না থাকলেও আপনি জার্মানিতে যেয়ে পড়াশোনার সময় প্রথম বছর থাকা-খাওয়ার খরচ চালাতে পারবেন কিনা তার জন্য সিকিউরিটি মানির ব্যবস্থা করতে হয়। যা এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১০ হাজার ইউরো এর কাছাকাছি। বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। সামনে আরও বাড়বে এ টাকার পরিমাণ। কারন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার লেটার পাওয়ার পর সে দেশের কোন ব্যাংকে নিজের নামে খোলা একটি একাউন্টে এ টাকা পাঠাতে হয়। যা আপনি সে দেশে গিয়ে একটি নির্দিষ্ট এমাউন্ট প্রতি মাসে তুলতে পারবেন।
জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সাধারণত প্রতিবছরে ২টি সেশনে ভর্তির জন্য আবেদন করা যায়। একটি সামার সেশন, যেখানে আবেদনের সময়সীমা থাকে ১ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারী পর্যন্ত। দ্বিতীয়টি হলো উইন্টার, এবং এখানে আবেদন করতে ১ মে থেকে ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে।
এরপরে আসে আইএলটিসের বিষয়টি। জার্মানিতে মাস্টার্সের সকল বিষয়েই স্থানীয় ভাষার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষায় পড়ানো হয়। তবে এ ক্ষেত্রে জার্মানি ভাষা শিখতে পারলে আপনি পড়াশোনার পাশাপাশি পার্ট টাইম জবে সুবিধা পাবেন। তবে ইংরেজি বলতে পারা লোকদের জন্যও জার্মানি বেশ সাবলীল। তাই নূন্যতম ৬.৫ আইইএলটিএস স্কোর যথেষ্ট জার্মানির শিক্ষা ব্যবস্থা ও জীবনধারণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য। তবে কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়ের ওপর নির্ভর করে জিআরই বা জিম্যাটও চাইতে পারে। এর জন্য আপনাকে আগেই বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে চাহিদাগুলো জেনে নিতে হবে।