ইউরোপ বাংলা ডেস্কঃসভ্যতার নিদর্শন ইউরোপ এর মধ্য থেকে অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য একটি সাম্যের জোট ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বর্তমানে ২৭ টি দেশ তাদের অর্থনীতিকে জোরদার করার জন্য একজোট হয়ে কাজ করে যাচ্ছে সদস্য রাষ্ট্রের এবং জোটের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ মিলেমিশে অবদান রেখে চলেছেন।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মোট কর্মসংস্থানের ৪৬ শতাংশ কর্মক্ষেত্রেই নারী নিয়োজিত রয়েছেন যা পুরুষের সাথে কর্মসংস্থানের প্রায় সহ অবস্থানে রয়েছেন। তবে হিসাবের পার্থক্য বিবেচনায় ২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী মোট কর্মক্ষম মহিলাদের মধ্যে মাত্র ৬৬ দশমিক ৬ শতাংশ কর্মক্ষেত্র কর্ম ক্ষেত্রে যুক্ত রয়েছেন এবং পুরুষ ৭৮ দশমিক ৩ শতাংশ যা ১১ দশমিক ৭ শতাংশ পার্থক্য বৈষম্য নির্দেশ করে।
নারীরা যে শুধু কর্মসংস্থানে যুক্ত রয়েছেন তা নয় তারা দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র গুলোর রাষ্ট্রপরিচালনায় গড় হিসেবে জাতীয় সংসদের ৩৩ শতাংশ আসন মহিলা । তবে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে ব্যাপক তারতম্য রয়েছে দশটি দেশের ক্ষেত্রে তা ৪০ থেকে ৫০ শতাংশের মধ্যে যেমন সর্বোচ্চ সুইডেনের সংসদীয় আসন সংখ্যা ৫০ শতাংশই নারী , স্পেন ৪২ পর্তুগাল ৪০ শতাংশ , ইতালি ৩৬ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন মাল্টা এবং হাঙ্গেরিতে ১৩ শতাংশ।
কর্মসংস্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে নিবিড় পরিষেবা এ ক্ষেত্রটিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নারীরা এগিয়ে আছে এই ক্ষেত্রেটিতে কাজ করেন প্রায় ৭ কোটি ৭৯ লক্ষ কর্মজীবী তবে এর মাঝে ৫৯ শতাংশ হচ্ছে নারী এবং অবশিষ্ট ৪১শতাংশ হচ্ছে পুরুষ। তবে এই কাজে প্রতিটি দেশে সমান নয় উপরের সারিতে রয়েছেন অর্থাৎ উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন নিবিড় পরিষেবায় লাটভিয়া এবং লিথুনিয়া সর্বোচ্চ ৬৭ শতাংশ অপরদিকে মাল্টা এবং লুক্সেমবুর্গের ৫০ শতাংশ।
অপরদিকে ব্যবস্থাপনার দিকে তাকালে অবশ্য নারীরা একটু পিছিয়ে আছেন অর্থাৎ জাতীয় কর্মসংস্থানে তারা প্রায় অর্ধেক দখল করে থাকলেও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে মাত্র ৩৪ শতাংশ। সদস্য রাষ্ট্রভেদে তারতম্য রয়েছে এই হিসেবে যেমন সর্বোচ্চ লাটভিয়া ৪৫ শতাংশ অপরদিকে মাঝারি অবস্থানে স্পেন ফ্রান্স পর্তুগাল ৩৬ শতাংশ, জার্মানি ৩১ শতাংশ, ইতালি ২৮ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ক্রোয়েশিয়া তে ২৪ শতাংশ।
মজুরির ক্ষেত্রে সাধারণত কিছুটা তারতম্য রয়েছে একজন নারী পুরুষের তুলনায় ঘন্টায় গড়ে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ কম আয় করেন। ২০১৪ সালে নারীরা পুরুষের তুলনায় ৩৯.৬ শতাংশ আয় করেছেন ।গত বছরগুলোতে তা উল্লেখ্য যোগ্যভাবে উন্নতি হয়েছে নারীদের উপার্জনের ক্ষেত্রে। নারী-পুরুষের আয়ের সমতা বিধানের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ১৯৫৭ সালে ইতালির রোম ট্রিটিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং ২০১৪ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য আরও কিছু সুপারিশ নিশ্চিত করে তার ফলে এই উন্নতি পরিলক্ষিত হয়। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে গত ৪ ঠা মার্চ/২০২১ পে ট্রানস্পরেন্সি নামে নতুন প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন যাতে বর্তমানে নারী-পুরুষের আয় বৈষম্য দূর করা যায়।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের চিত্র যদি সংক্ষেপে বিশ্বের সাথে একটু মিলিয়ে নিলে দেখা যায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী (আইএলও) মোট কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর ৪৯ শতাংশ নারী কর্ম ক্ষেত্রে যুক্ত এবং পুরুষ ৭৫ শতাংশ। পার্থক্যের বিচারে যা ২৬ শতাংশ, বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কর্মক্ষম নারী কর্ম ক্ষেত্রে যুক্ত রয়েছেন ৩৩ শতাংশ এবং পুরুষ ৭৯ দশমিক ৮ শতাংশ পার্থক্য বৈষম্য ৪৬ দশমিক ৮ শতাংশ। পৃথিবীর শক্তিশালী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্ম ক্ষেত্রে নারী ৫৫ দশমিক ৭ এবং পুরুষ ৬৮ দশমিক ৩ শতাংশ পার্থক্য বৈষম্য ১০ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে ২০১৯ সালের এক হিসেব অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের মোট কর্মসংস্থানের ৪৭ শতাংশ কর্ম ক্ষেত্রে নারীরা কাজ করছেন বলতে গেলে তাদের দেশের অর্ধেক কর্মসংস্থানে নারীদের উপস্তিতি ।
নারীরা সব সময়ই পশ্চাৎপদ এই সমাজে বেড়ে উঠছে যার ব্যতিক্রম এখানেও আমরা (ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও দেখিনি) তবে অগ্রগতি দেখেছি উন্নতি দেখেছি যা ঊর্ধ্বগামী। করোনা মহামারী আমরা একটা বিষয় লক্ষ করেছি স্বাস্থ্য কর্মী হিসেবে সম্মুখযুদ্ধে
নারীরাই ছিলেন অগ্রগামী। তাই পরিশেষে নারীর সম্মানে এই নারী দিবসে ইউরোপ গঠনে নারীদের ভূমিকায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর সেই মহিমান্বিত লাইন দুটো বলতেই পারি পৃথিবীতে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর’
অন্যান্য সংবাদঃ
- মহামারির ছোবলে জার্মানিতে নাজেহাল বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা
- পর্তুগালের পর্যটকদের বাতিল ভ্রমণের অর্থ ফেরতের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম