Saturday, এপ্রিল ২৭, ২০২৪

যে ৩ অস্ত্র ঘুরিয়ে দিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মোড়

ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এক বছর আগে যখন ইউক্রেনে তার বাহিনী পাঠিয়েছিলেন, তখন অধিকাংশ পর্যবেক্ষকের ধারণা ছিল রুশ বাহিনী দ্রুত ইউক্রেন দখল করে নেবে। তবে বাস্তবে তার বিপরীতটাই ঘটেছে। ইউক্রেনের কাছ থেকে দখল করা অনেক এলাকা থেকে পিছিয়ে আসতে হয়েছে রুশ বাহিনীকে। এর জন্য বিশেষজ্ঞরা ইউক্রেনের উচ্চ মনোবল এবং উচ্চতর সামরিক কৌশলকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। তবে সাধারণভাবে বলতে গেলে তিনটি অস্ত্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহার করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে ইউক্রেন। এমনকি যুদ্ধের মোড়ও অনেকটা ঘুরিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।

জ্যাভলিন: যুদ্ধের একেবারে শুরুতে ধারণা করা হয়েছিল, রাশিয়ার সাঁজোয়া কলামগুলি কয়েক দিনের মধ্যে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে প্রবেশ করবে। ওই সময় রুশ ট্যাঙ্কগুলো ঠেকাতে ইউক্রেনীয়রা যে অস্ত্রটি ব্যবহার করেছিল সেটি হচ্ছে জ্যাভলিন। কাঁধে বহনযোগ্য ও চালিত এই অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ক্ষেপণাস্ত্র এক জন ব্যক্তিই পরিচালনা করতে পারে।

মার্কিন অস্ত্র নির্মাতা লকহেড মার্টিন জানিয়েছে, বলেছে, লক্ষ্যবস্তুতে নির্বাচিত করার পর জ্যাভলিনের বাটনে আঙ্গুল রাখে অপারেটর এবং ওই সময় লাঞ্চারটি তার লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জন্য লক হয়। অপারেটর ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার সাথে সাথে নিরাপদ স্থানে লুকানোর জন্য দৌঁড়াতে সক্ষম হয়। যুদ্ধের প্রথম দিকে এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ রাশিয়ানরা শহুরে এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করার সময় তাদের থাকার প্রবণতা ছিল। একজন জ্যাভলিন অপারেটর একটি ভবন থেকে বা একটি গাছের পিছনে থেকে গুলি করতে পারে এবং রাশিয়ানরা পাল্টা গুলি করার আগেই সে সটকে পড়তে পারে। এ ধরনের হামলার কারণে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হয় রুশ বাহিনীকে।

হিমার্স : এটি দ্রুত স্থানান্তরযোগ্য আর্টিলারি রকেট সিস্টেম। মার্কিন সেনাবাহিনীর দেওয়া নাম হচ্ছে এম১৪২। তাদের মতে এটি ‘সব ধরনের আবহাওয়ায় দিনে রাতে ২৪ ঘণ্টা প্রাণঘাতী হামলা চালাতে সক্ষম এবং প্রতিক্রিয়াশীল নির্ভুল অস্ত্র ব্যবস্থা।’

মূলত, হিমার্স হচ্ছে, ৫ টনি ট্রাক, যা একটি পড বহন করে যেটি একই সাথে ছয়টি রকেট উৎক্ষেপণ করতে পারে। এটি বিস্ফোরক ওয়ারহেডগুলোকে যুদ্ধক্ষেত্রের সামনের লাইনের বাইরে পাঠাতে পারে এবং পাল্টা হামলা এড়াতে দ্রুত অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে। এটি গাইডেড মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম, যেটি ৭০ থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।

সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি প্রোগ্রামের সিনিয়র উপদেষ্টা মার্ক ক্যানসিয়ান জানুয়ারিতে লিখেছিলেন, ‘যদি জ্যাভলিন যুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ের আইকনিক অস্ত্র হয়, তাহলে হিমার্স হবে পরবর্তী পর্যায়ের আইকনিক অস্ত্র।’

বায়রাকতার টিবি২ ড্রোন: ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের কারণে তুরস্কের ডিজাইন করা ড্রোনটি বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত মনুষ্যবিহীন এরিয়াল ভেহিকেল (ইউএভি) হয়ে উঠেছে। এটি তুলনামূলকভাবে সস্তা, প্রাণঘাতী আঘাত হানতে পারে এবং ভিডিওতে এর হত্যাকাণ্ড রেকর্ড করে।

এই ড্রোনগুলো থেকে পাওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ড্রোনটি রাশিয়ার অস্ত্র, আর্টিলারি ও ক্ষেপণাস্ত্র, লেজার গাইডেড রকেট এবং স্মার্ট বোমা ধ্বংস করতে সক্ষময়। ফরেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো অ্যারন স্টেইন আটলান্টিক কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে লিখেছেন, ‘টিবি২ এর ভাইরাল ভিডিওগুলি টিকটক যুগে আধুনিক যুদ্ধের একটি নিখুঁত উদাহরণ।’ তিনি বলেন, এটি ‘জাদু অস্ত্র’ না কিন্তু এটি ‘যথেষ্ট ভাল।’

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা