ইউরোপ বাংলা ডেস্কঃপর্তুগালে দ্বিতীয়বারের মতো সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম থাকলেও প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শীতের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে করোনার ছোবল পর্তুগালে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। সরকারের চরম অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বাধ্য হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে।
তবে ২০২০ সালে মহামারীর প্রথম আঘাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল তখন পূর্বপ্রস্তুতির না থাকায় এবং নতুন পরিস্থিতির উদ্ভব হাওয়ায় দূরবর্তী অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা কষ্টসাধ্য হয়েছিল। টেলিভিশনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কে সহযোগিতা করা হয়েছিল তবে টেলি শিক্ষা কার্যক্রম সাধারণত একমুখী যা পর্তুগালের শিক্ষা এবং শিশুদের জন্য অনেকটাই বেমানান ছিল।
এমত অবস্থায় নতুন পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে পর্তুগালের সকল শিক্ষার্থীদের জন্য কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট নিশ্চিত করতে সরকারের পক্ষ থেকে যে সকল শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার নেই তাদেরকে একটি ল্যাপটপ কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করা হয়েছে। ফলে সকল শিক্ষার্থীকে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
এই অনলাইন পাঠদান প্রক্রিয়ার যতগুলো শক্তিশালী মাধ্যম রয়েছে সবগুলোকে কাজে লাগানো হয়েছে যেমন: গুগোল ক্লাসরুম, খান একাডেমি, ভার্চুয়াল স্কুল (পর্তুগাল ভিত্তিক ডিজিটাল পাঠ্যপুস্তুক প্ল্যাটফর্ম), লেইয়া(ডিজিটাল পাঠ্যপুস্তক), মাইক্রোসফট টিমএবং ভিডিও কনফারেন্সিং এর বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় মাধ্যম জুম।
স্কুল কর্তৃপক্ষ বলতে গেলে দিনরাত্রি কঠোর পরিশ্রম করে ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের কে এই প্ল্যাটফর্ম এর সাথে যুক্ত করার কাজ করছেন। পূর্ব থেকে একটি ছোট প্রস্তুতি থাকলেও এভাবে পুনরায় স্কুল বন্ধ করার বিষয়ে অবস্থান টা একটু ভিন্ন ছিল। তাই শিশুরা যাতে আবারো পিছিয়ে না পরে সে কারণে সর্বাত্মক চেষ্টা মাধ্যমে শিক্ষক এবং স্কুল কর্তৃপক্ষ নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
শুধু একাডেমিক শিক্ষাই নয় শরীরচর্চা এবং বিভিন্ন মানসিক বিকাশ মুলক শিক্ষা ও যুক্ত করা হয়েছে এই অনলাইন কার্যক্রমের সাথে। প্রতিদিন সকাল সাড়ে নটা থেকে বিভিন্ন বিরতি দিয়ে সারে তিনটা পর্যন্ত চলবে একাডেমিক শিক্ষা কার্যক্রম এবং অতঃপর সাপ্তাহিক দিনভেদে একেক দিন একেক টি অতিরিক্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। তবে শরীরচর্চার উপরে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা গেছে তারা এমন একটি পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছেন, যাতে শিশুরা শ্রেণিকক্ষের মতই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে এবং পরবর্তীতে সরাসরি উপস্থিত হয় শ্রেণিকক্ষের শিক্ষা কার্যক্রম চালু হলেও এই ডিজিটাল শিক্ষা পদ্ধতি আরো সমুন্নত উন্নয়নের মাধ্যমে চালু রাখার কথা ব্যক্ত করেছেন। এই অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক একাডেমিক কার্যক্রমের মতোই বাধ্যতামূলক অর্থাৎ শিক্ষার্থীকে অবশ্যই অনলাইন মাধ্যমে এবং উপস্থিত থাকতে হবে।
পর্তুগাল একটি শিশু বান্ধব দেশ , স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা এবং অধিকারের দিক থেকে শিশুরা সবসময়ই এগিয়ে । তাই শিশু স্বাস্থ্য , মানসিক বিকাশ এবং সর্বোপরি একাডেমিক শিক্ষার ধারা অব্যাহত রাখার জন্য সরকার শেষ মুহূর্তে স্কুল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তথাপি স্কুল বন্ধ হওয়ার পর শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম যাতে বাধাগ্রস্ত না হয় তার জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছেন।