ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : জ্বালানি সংকটের মুখে নিউ সাউথ ওয়েলস অঙ্গরাজ্যের বাড়িগুলোকে আলো নিভিয়ে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার জ্বালানি মন্ত্রী ক্রিস বোয়েন। তিনি বলেন, বিকল্প ব্যবস্থা থাকলে মানুষের প্রতিদিন সন্ধ্যায় দুই ঘণ্টা করে আলো বন্ধ রাখা উচিত। তবে ‘বিদ্যুৎহীনতা’ এড়ানো যেতে পারে বলে আত্মবিশ্বাস রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
মূল্য বৃদ্ধির কারণে দেশটির প্রধান পাইকারি বিদ্যুতের বাজার স্থগিতের পরই এই আহ্বান জানালেন জ্বালানিমন্ত্রী। তিনি নিউ সাউথ ওয়েলসের বাসিন্দাদের যতটুকু সম্ভব বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের আহ্বান জানিয়েছেন। ক্যানবেরায় অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নির্দিষ্ট কোনো কিছু চালানোর ব্যাপারে যদি আপনাদের পছন্দ থাকে, তাহলে ৬টা থেকে ৮টার (সন্ধ্যা) মধ্যে সেগুলো চালাবেন না।
অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের বৃহত্তম কয়লা এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানিকারক দেশ। তবে দেশটি গত মাস থেকে বিদ্যুৎ সংকটে আছে। দেশের এক তৃতীয়াংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় কয়লা ব্যবহার করে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করে কার্বন নিঃসরণ কমাতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে দেশটির বিরুদ্ধে অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
অস্ট্রেলিয়ার প্রায় এক চতুর্থাংশ কয়লা চালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বর্তমানে অপ্রত্যাশিত বিভ্রাট এবং নির্ধারিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের কারণে পরিষেবার বাইরে রয়েছে। ইউক্রেনে আগ্রাসনের জেরে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কারণে বিশ্বব্যাপী কয়লা ও গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় কিছু বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী তাদের খরচ বেড়ে যেতে দেখেছে।
এদিকে কোভিড-১৯ বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি উন্মুক্ত হওয়ায় এবং ঠাণ্ডার মধ্যে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। আর এসব কারণে অস্ট্রেলিয়ার জ্বালানি বাজার নিয়ন্ত্রক (এইএমও) পাইকারি বাজারে প্রতি মেগাওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুতের দাম তিন হাজার অস্ট্রেলীয় ডলারের ওপরে নির্ধারণ করে দিয়েছে। তবে কয়েকটি উৎপাদক প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, বেধে দেওয়া এই মূল্য তাদের উৎপাদন খরচের নিচে। ফলে তারা উৎপাদন ক্ষমতা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।