ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশ সমূহের সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুর জেলার প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে কিছুটা সময় বিলম্ব করে অধিকাংশ ঈদের নামাজের জামায়াত মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় ফরিদগঞ্জ উপজেলার টোরামুন্সির হাট জামে মসজিদে। এতে ইমামতি করেন মাওলানা এএসএম রহমত উল্যাহ। এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরীফে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন দরবরা শরীফের পীর আরিফ চৌধুরী। সেখানে মাঠেই ঈদের নামাজে অংশগ্রহন করেন প্রায় চার শতাধিক মুসল্লী।
এছাড়াও দরবার শরীফে পৃথক জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৯টায়। এতে ইমামতি করেন দরবার শরীফের পীর জাদা ড. মুফতি বাকী বিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী। এই জামায়াতে অংশগ্রহন করেন পাঁচ শতাধিক মুসল্লী। নামাজ আদায় শেষে দেশের সুখ ও সমৃদ্ধি এবং মুসলিম উম্মার শান্তি কামনায় দোয়া করা হয়। এ সময় মুসল্লীরা একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
সাদ্রা দরবার শরীফে ঈদ জামাতে অংশগ্রহনকারী মুসল্লী আব্দুল্লাহ ও রহমান মিয়া জানান, বৃষ্টির কারণে একটু পরে হলেও খুবই সুন্দর পরিবেশে নামাজ আদায় করেছেন। পরে বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেই তারা কোরবানির কাজ সম্পন্ন করেন। একই কথা বলেন, টোরা মুন্সিরহাটের আনোয়ার হোসেন মামুন মুন্সি। এদিকে, ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ড. মুফতি বাকী বিল্লাহ ওরফে মিশকাত চৌধুরী কালের কণ্ঠকে জানান, বিগত ১৯২৮ সাল থেকে আমার দাদা আল্লামা শায়েখ ইসহাক (রহ.) এর চিন্তা চেতনা থেকে বের হয়ে আসা এই নিয়মে ঈদ উদযাপন করে আসছি। বলতে পারি আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ করছি।
কারণ সৌদি আরবও বিশ্বের অন্য দেশের সাথে যোগাযোগ করে তারিখ নির্ধারণ করে। আজকে বিশ্বের ৪৭টি দেশ ঈদুল আজহা উদযাপন করছে। আগাম ঈদ নয়, আরব দেশ সমূহের সাথে আমাদের দেশেও একসঙ্গে সবাই ঈদ উদযাপন করতে পারি কিনা এই বিষয়ে বিজ্ঞ আলেমদের নিয়ে আলোচনা করা যায়। জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরিফের মরহুম পীর আল্লামা শায়েখ মাওলানা ইসহাক (রহ) এর অনুসারীরা বিগত ৯৫ বছর ধরেই প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে রোজা পালন, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপন করে আসছেন। পর্যায়ক্রমে চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এই মতবাদের অনুসারী সংখ্যা বাড়ছে।
আজ ঈদ উদযাপন করা গ্রামগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে: হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, শ্রীপুর, মণিহার, বড়কূল, অলিপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বদরপুর, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, বাসারা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মোহনপুর, এখলাশপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। এছাড়াও এসব উপজেলার অনেক গ্রামের আংশিক মুসল্লীরা ঈদের নামাজ আদায় করেছেন।