Saturday, এপ্রিল ২০, ২০২৪

দেশে অনলাইনে যৌ*ন হয়রানি বেড়েছে

ডেস্ক রিপোর্টঃ বিগত বছরগুলোতে দেশে শতকরা ৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ মেয়ে শিশু অনলাইনে যৌ*ন শোষণ, হয়রানি এবং নির্যাতনের শিকার হয়েছে। অথচ করোনাকালে এই নিপীড়নের হার বেড়েছে প্রায় চারগুণ। ৩০ শতাংশ শিশু জানিয়েছে, করোনাকালে তারা কোনো না কোনোভাবে ইন্টারনেটে নিপীড়ন বা নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ১২ শতাংশ শিশু এ বিষয়ে কোনো তথ্য জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। নিপীড়িত শিশুদের ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ হচ্ছে কন্যা শিশু এবং ৪৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ ছেলে শিশু।

 

গতকাল রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) একটি জরিপের ফল তুলে ধরে এ তথ্য প্রকাশ করে। ২০২০ সালে শিশুদের বিরুদ্ধে অনলাইনে যৌ*ন শোষণের ফলে সৃষ্ট ঝুঁকি বিষয়ক এ গবেষণা পরিচালনা করে আসক।

 

সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির শিশু অধিকার ইউনিটের সমন্বয়ক অম্বিকা রায় বলেন, দেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ পাশ হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য এই আইনে অনলাইনে শিশুদের দ্বারা শিশু নির্যাতন বিষয়টিকে চিহ্নিত করে আলাদা কোনো বিধান রাখা হয়নি। ফলে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে কন্যাশিশুর প্রতি সহিংসতা বেড়েই চলেছে। যদিও বেশি বয়সি শিশুরা কম বয়সি শিশুদের চেয়ে অধিক মাত্রায় অনলাইনে নিপীড়নের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। তবে সার্বিকভাবে সব শিশুই ক্ষতিকর কনটেন্ট, যৌ*ন হয়রানি এবং নিপীড়নের আশঙ্কায় রয়েছে।

জরিপের ফল তুলে ধরে বলা হয়, করোনাকালে শিশুরা যেসব ধরনের নির্যাতিত হয়েছিল তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল শিশুদের ব্যক্তিগত ও অসংবেদনশীল তথ্য ইন্টারনেটে প্রকাশ করা, অনলাইনে যৌন হয়রানি ও যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়া, অশালীন প্রস্তাব দেওয়া, সাইবার বুলিং ব্ল্যাকমেইলিং, পর্নোগ্রাফি এবং কোনো না কোনোভাবে অনলাইনে যৌনতা বিষয়ক ছবি বা তথ্য দেখতে পাওয়া ইত্যাদি।

 

আসক জানায়, করোনাকালে অনলাইনে নিপীড়নের শিকার শিশুদের মধ্যে ৮৮ শতাংশ জানিয়েছে তারা অপরিচিত ব্যক্তি কর্তৃক অনলাইনে হয়রানির শিকার হয়েছে। অনলাইনে নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া শিশুদের মধ্যে মাত্র ৪১ শতাংশ শিশু তাদের অভিভাবক ও পরিবার পরিজনকে অবহিত করেছে নির্যাতিত শিশুদের মধ্যে মাত্র ৬ শতাংশ নিপীড়িত শিশু বা তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

 

জরিপে তথ্যদানকারী ১০৮ জন অংশগ্রহণকারী শিশুদের ৫৪ শতাংশ জানায়, তারা নিজস্ব মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ট্যাব ইত্যাদি থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। এদের মধ্যে ৮৪ শতাংশ শিশু সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। এদের সবাই ফেসবুক মেসেঞ্জার ব্যবহার করে। এ ছাড়া ৩৮ শতাংশ শিশু ইমো ব্যবহার করে এবং ১৬ শতাংশ শিশু হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে।

প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে আসক অনলাইনে শিশু নিপীড়নের ঘটনা প্রতিরোধে কিছু সুপারিশ উপস্থাপন করে। এর মধ্যে-শিশুদের মধ্যে নিরাপদ ইন্টারনেট বিষয়ে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে সাইবার নিরাপত্তা; অনলাইনে শিশু যৌন নির্যাতনের ধরনসমূহ চিহ্নিত করে সে সম্পর্কিত বিষয়সমূহ পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তিকরণ;

সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে অভিভাবকসহ সব পর্যায়ের অংশীদারদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা; অভিভাবকদের তাদের শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল অ্যাপস ব্যবহারে উৎসাহী করতে উদ্যোগ গ্রহণ; এ-সংক্রান্ত মামলাগুলো সাইবার ট্রাইব্যুনালের অধীনে পৃথকভাবে শিশু-বিষয়ক মামলাসমূহ পরিচালনার ব্যবস্থা করা উল্লেখযোগ্য।

এ ছাড়া প্রাসঙ্গিক আইনগুলো (শিশু আইন ২০১৩-সংশোধিত ২০১৮), তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৩), পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮, অনলাইনে শিশু ও নারীদের যৌন হয়রানি ও নির্যাতন প্রতিরোধ ও প্রতিকারে সংশোধনী আনার জন্যও বলা হয়।

ইউরোপ বাংলার অন্যান্য সংবাদঃ

ইউরোপ বাংলা

ইউরোপ বাংলা

একজন ফ্রিল্যান্স রাইটার, ব্লগার, এডুকেশনাল কনসালট্যান্ট, ক্যারিয়ার কাউন্সিলর, উদ্যোক্তা।

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা