মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (ইংরেজি: United States of America ইউনাইটেড স্টেটস অফ আমেরিকা) উত্তর আমেরিকার একটি দেশ। দুনিয়ায় আমেরিকা চিনে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বিরল আর পৃথিবীর বহু মানুষের স্বপ্নের দেশ আমেরিকা। আর এই স্বপ্নের দেশে কিভাবে যাওয়া যায়, সেটেল হওয়া কৌতূহলের শেষ নেই। আজকে মূলত আলাপ করবো কিভাবে আপনি আপনার স্বপ্ন কে বাস্তবায়ন করতে পারবেন। তবে হা একটা কোথা বলে রাখি যে উপায়গুলো অনুসরণ করলে আর যোগ্যতা থাকলে আপনি আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন খুব সহজে। নানামুখী অভিবাসন বিরুধি আইনের মারপ্যাঁচে অনেকের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছিল কিন্তু বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবার আমেরিকান অভিবাসন আইন কানুন নমনীয় করেছেন অভিবাসীদের জন্য। চলুন দেখি কোন কোন ক্যাটাগরিতে আপনি আমেরিকান আসতে পারবেন ? data-offset-key=”7vrk2-0-0″>EB-5 আর ইনভেস্টর প্রোগ্রাম যাদের কাড়ি কাড়ি টাকা আছে তাদের জন্য এটা মূলত। কোটি টাকা ইনভেস্তের মাধ্যমে গ্রিন কার্ড নেয়ার একমাত্র উপায় হল EB-5। এবার আলাপ করি বিস্তারিত।
ইবি-১- EB-1: ইমপ্লয়মেন্ট-বেজড’ (ইবি) সিরিজ এর প্রথম ক্যাটাগরি হচ্ছে EB-1। স্পেশাল এই আপনি চাইলে আমেরিকান স্থায়ী হতে পারবেন গ্রিন কার্ডের মাধ্যমে। তবে এই ক্ষেত্রে কিছু শর্ত বেধে দেয়া আছে। আপনাকে চাকুরী, বিজনেস, শিক্ষা, খেলাধুলা, আর্টস এই সব বিষয়ের উপর আন্তর্জাতিক পুরুস্কারপ্রাপ্ত হতে হবে। যদি একটু সহজ করে বলি যাদের এই সকল সেক্টরে এক্সট্রা অরডিনারি কাজের কারণে বিদেশী বিভিন্ন খেতাব যেমন উদাহরনাসরুপ নোবেল প্রাইজ পাওয়া এমন সব বাক্তি এই ক্যাটাগরিতে আমেরিকায় স্থায়ী হতে পারবেন।
২য়ত আপনি যদি উচ্চতর ডিগ্রি সম্পূর্ণ প্রফেসর, গবেষক হন তাহলে আপনি আমেরিকায় ইবি-১ এর অধীতে আসতে পারবেন। আপনার ক্ষেত্রেওঁ কিছু শর্তও আছে। যেমন আপনাকে একজন আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা প্রতিষ্ঠান থেকে স্বীকৃত প্রাপ্ত হতে হবে। আপনাকে শুধুমাত্র গবেষণা এবং শিক্ষকতার পেশা হিসাবেই আমেরিকা আসতে হবে সেঁতা হতে পারে কোন সরকারি প্রতিষ্ঠানের জব অফার বা প্রাইভেট জব অফার । আপনাকে অবশ্যই মিনিমাম ৩ টার বেশি আন্তর্জাতিক স্বীকৃত প্রাপ্ত গবেষণার ফলাফল থাকতে হবে।
৩য়তঃ কিছু সংখ্যক আমেরিকান মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানির ম্যানেজার কিংবা এক্সিকিউটিভ হিসাবে আপনি চাইলে ইবি-১ এর অধিনে আমেরিকায় আসতে পারবেন। যদি আমেরিকান কোন কোম্পানি আপনাকে আমেরিকার বাহিরে থেকে ম্যানেজার বা এক্সিকিউটিভ হিসাবে নিয়োগ দিতে চায় সেই ক্ষেত্রে আপনি ইবি-১ এর অধীনে আমেরিকা আসতে পারবে। তবে এখানেও শর্ত আছে আপনাকে উচ্চতর ডিগ্রি থাকতে হবে এবং ম্যানেজার/ এক্সিকিউটিভ লেভেলের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে । আর যে প্রতিষ্ঠান আপনাকে নিয়োগ দিবে তাদের বাবসার বয়স মিনিমাম ২/৩ বছর এর পুরনো হতে হবে। EB-1 এর জন্য সার্টিফিকেশান এর দরকার নেই। অর্থাৎ লেবার এসেসমেন্ট লাগবে না।
ইবি- ২ – EB-2: কোন ব্যক্তির যদি কোনো উচ্চতর ডিগ্রি এবং ব্যতিক্রমী দক্ষতা থাকে তাহলে।
ইবি-২ ভিসার আবেদন করতে পারবেন। এই ক্ষেত্রে আপনাকে মিনিমাম U.S. baccalaureate Degree অথবা ব্যাচেলর ডিগ্রির সমমনা ডিগ্রি + ৫ বছরের post-baccalaureate থাকতে হবে। অর্থাৎ যাদের আমেরিকান, মাস্টার্স, ডক্টরেট ডিগ্রি আছের তাদের
জন্য ইবি-২ ভিসায় আসার সুযোগ আছে। আপনি চাইলে আমেরিকার বাহিরে থেকে কিংবা আমেরিকায় থেকে ইবি-২ এর আবেদন করতে পারবেন (যদি উচ্চতর ডিগ্রি নেয়ার পর আমেরিকান থেকে থাকেন )
ইবি-৩ EB3: ইবি-৩ ক্যাটাগরিতে মেইনলি ৩টা সেটে ভাগ করা হয়েছে। ১। দক্ষ, ২। প্রফেশনাল, ৩। নন স্কিল/ অদক্ষ
যারা ইবি-৩ এর দক্ষ এর অধীনে আবেদন করবে তাদের অবশ্যই আমেরিকান পোস্ট সেকেন্ডারি ডিগ্রী এর সমমান বিদেশী ডিগ্রী থাকতে হবে।
আপনি যে জব পজিশনের জন্য ইবি-৩ এর আবেদন করবেন মনে রাখবেন সেই ক্যাটাগরির জবের জন্য আমেরিকার মার্কেটে ক্যান্ডিডেট পর্যাপ্ত নেই। অর্থাৎ যে জব গুলোর জন্য আমেরিকায় লোক আগ্রহী থাকে কম সেসব পজিশনে আপনি ইবি-৩ এর জন্য আবেদন করতে পারবেন যদি দক্ষ হন এবং আপনার মিনিমাম ২ বছরের ঐ সেক্টরে বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকে। ২য় সেটে প্রফেশনালদের রাখা হয়েছে ইবি-৩ এর। আপনি যদি আমেরিকান ব্যাচেলর ডিগ্রী সমমান ডিগ্রীধারি হন তাহলে। আপনি যে জবের জন্য আবেদন করবেন সেই জবের জন্য কোয়ালিফাইড লোক আমেরিকায় নেই। অর্থাৎ Occupation shortage list এ থাকা জব গুলোর জন্য আপনি ইবি-৩ এর মাধ্যমে আসতে পারবেন আমেরিকায়।
৩য় সেটে রাখা হয়েছে নন স্কিল বা অদক্ষদের। ইবি-৩ এর এই ধাপে আপনি চাইলে কোন প্রকার শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়া এবং মিনিমান ২ বছরের জব এক্সপেরিএন্স থাকলে ইবি-৩ এর ননস্কিল ভিসায় আবেদন করতে পারবেন। তবে আপনি যে জবের জন্য আবেদন করবেন সেই জবের জন্য আগ্রহী লোক আমেরিকায় নেই এমন সব জব হতে হবে। ইবি-৩ প্রোগ্রামের সকল সেটের জন্য লেবার সার্টিফিকেশান এবং ফুল টাইম জব কন্ট্রাক দরকার হবে। অর্থাৎ আপনাকে অবশ্যই লেবার মার্কেট টেস্ট এবং জব স্পন্সর মেনেজ করতে হবে।
ইবি-৪ EB-4: এটা হচ্ছে আমেরিকার স্পেশাল ভিসা প্রোগ্রাম। সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন এন্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্ট (আইএনএ) কিছু ক্যাটাগরির মানুষকে তারা চাইলে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমত দিতে পারে। তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ধর্মীয় কাজে আসা আমেরিকায় কোন বাক্তি, ন্যাটোর সাবেক কর্মী বা ন্যাটোর সাবেক কর্মীর স্পাউস, ডাক্তার, স্বশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, ইরাক ও আফগানিস্তানের ভাষা জানেন এবং ইংরেজি অনুবাদ করতে পারেন এমন ব্যক্তি। এক্ষেত্রে কোনো চাকুরির অফার লেটার দরকার হয় না। ইবি-৫ EB5: সম্পদশালী/ধনীমানুষ জন বিশ্বের সব দেশে স্পেশাল রেসিডেন্সি প্রোগ্রামের অধীনে গ্রিনকার্ড কিংবা নাগরিকত্ব কিনে থাকেন। ইউরোপের অনেক দেশ আছে যারা টাকা ওয়ালা ব্যক্তিদের স্পেশাল রেসিডেন্স বা নাগরিকত্ব দিয়ে থাকে। ইবি-৫ হচ্ছে ঠিক এমনি একটি প্রোগ্রাম যার অধীনে আপনি চাইলে ইনভেস্টের মাধ্যমে আমেরিকায় গ্রিন কার্ড নিতে পারবেন। ঠিক কি পরিমাণ টাকা ইনভেস্ট করলে আপনি গ্রিন কার্ড পাবেন সেটার ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত ভাবে বলছি। ইবি-৫ ক্যাটাগরিতে ভিসা পেতে কমপক্ষে ৫ লাখ ডলার বা বাংলাদেশি টাকায় ৪ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করতে হবে। অথবা আমেরিকা এসে ব্যবসা শুরু করতে হবে এবং কমপক্ষে ১০ জন আমেরিকানকে চাকুরি দেয়ার সামার্থ্য থাকতে হবে।
বিবাহ সূত্রেঃ আপনি কোন আমেরিকান নাগরিককে বিয়ে করেন কিংবা গ্রিন কার্ড হোল্ডারকে বিয়ে করেন তাহলে আপনি আমেরিকায় স্পাউজ হিসাবে আসতে পারবেন । কোন কারণে আপনার সন্তান সন্ততি থেকে থাকলে ( যদি আগে বিয়ে হয়ে থাকে ) তারাও আসতে পারবেন স্পন্সর এর মাধ্যমে।