ইউরোপ বাংলা ডেস্কঃ সাইপ্রাস ভূমধ্য সাগরের মধ্যে অবস্থিত একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। এই সাইপ্রাসের আবার দুইটা ভাগ। একটা টার্কিশ রিপাবলিক অফ নর্থ সাইপ্রাস বা তুর্কি সাইপ্রাস নামে পরিচিত। যা মোট আয়তনের ৬০% দখলে আছে আর আরেক পার্ট হল রিপাবলিক অফ সাইপ্রাস যা গ্রিক সাইপ্রাস নামে পরিচিত। অর্থনৈতিকভাবে ইউরোপের মধ্যম সারির দেশ। ২০০৪ সালে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে যোগদান করে এই দেশটি। দ্বীপরাষ্ট্র হওয়ায় অভিবাসীদের আনাগুনা কম ছিল আগে থেকেই। একটা সময় ছিল সাইপ্রাসে প্রচুর ছাত্র ছাত্রই পড়তে যেত দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে। বৈধভাবে থাকার সুযোগ না থাকার কারণে মূলত এখন প্রায় ছাত্র যাওয়া বন্ধের পথে। অল্পস্বল্প ছাত্র এখনো পড়তে যায় কিন্তু আগের থেকে অনেক কম।
সিরিয়ায় যুদ্ধ শুরু হবার কারণে সাইপ্রাসে শরণার্থীদের আনাগুনা বেশি হয়। তুর্কি থেকে নর্থ সাইপ্রাস হয়ে কিংবা বোট দিয়ে অন্য ভাবে সাইপ্রাসে পাড়ি জমায়। পরবর্তীতে এসাইলাম হিসাবে আবেদন করে। সিরিয়ান ইরাকিদের সংখ্যা মূলত বেশি। কিন্তু বর্তমান সময়ে বাংলাদেশী, পাকিস্তানি, নাইজেরিয়ান, ইরানিদের বেশি কিছু রিপোর্ট দেখা গেছে। তারা খুব সহজে তুর্কি থেকে নর্থ সাইপ্রাসে যেতে পারেন বিধায় নর্থ সাইপ্রাস থেকে বর্ডার পার হয়ে দালালের মাধ্যমে সাইপ্রাসে যেয়ে থাকেন। তাদের উদ্দেশ সাইপ্রাস থেকে অন্য কোথাও মুভ হওয়া। দ্বীপ রাষ্ট্র হওয়ায় সাইপ্রাস থেকে ভিসা নিয়ে ইউরোপের অন্য দেশে মুভ হওয়া খুব কঠিন ব্যাপার। এমন কি বৈধভাবে থাকলেও আপনি সাইপ্রাস থেকে ইউরোপের অন্য দেশে যাওয়ার সুযোগ পাবেন না।
যারা নর্থ থেকে সাইপ্রাসে প্রবেশ করে তারা এসাইলাম আবেদনের পরে কাজের সুযোগ পান, আর এসাইলামের যে পারমিট দেয়া হয় সেটার বিপরীতে কাউকে বিয়ে করা যায়। সাইপ্রাস থেকে ইউরোপের অন্যান্য দেশে যাওয়ার জন্য মূলত যে বিয়ে দেখান হয় তার ৯০% ই চুক্তিবদ্ধ বিয়ে। টাকার বিনিময়ে পেপারস পাবার আসায় উকিলের এবং রোমানিয়া বুলগেরিয়া থেকে মেয়ে নিয়ে বিয়ে দেখানো হয়। যার অধিকাংশ ই পেপারস পাবার পর ইউরোপে পাড়ি দিয়ে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় কিংবা খুঁজ খবর থাকে না একে অপরের সাথে।
সম্প্রতি সাইপ্রাস নর্থ সাইড থেকে এইসব অভিবাসীদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে খুব কঠোর হতে যাচ্ছে, সাইপ্রাসের কিছু দিন আগে কারা অবৈধ ভাবে গেলে শরণার্থী বা রাজনৈতিক আশ্রয় নিতে পারবেন তার তালিকা প্রকাশ করেছে। তারমধ্যে বাংলাদেশের নাম নেই, অর্থাৎ বাংলাদেশীরা সেই সুযোগ পাবে না এখন থেকে এসাইলাম হিসাবে আশ্রয়য় চাওয়ার।
রিপোর্টটি পড়ুনঃ ২১ নিরাপদ দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে সাইপ্রাস, রাজনৈতিক আশ্রয়ের সুযোগ নেই বাংলাদেশিদের
গত সোমবারে তারা সাইপ্রাসে পার্লামেন্টে প্রস্তাব পাসঃ অবৈধ ইমিগ্রান্টসকে সাইপ্রাস প্রবেশে সাহায্য করলে ১৫ বছরের জেল ও জরিমানার বিধান রেখে পাস করার প্রস্তাব দিয়েছে। তাতে করে সাইপ্রাসে যারা অনুপ্রবেশ করবে এসব অভিবাসীদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াল।
তুর্কি সাইপ্রাস দিয়ে যারা ই শরণার্থীদের সাইপ্রাসে যেতে সাহায্য করবে তাদের ১৫ বছরের জেলের পাশাপাশি ২ লাখ ইউরো পরিমানা জরিমানা করার প্রস্তাব দিয়েছে সাইপ্রাস হাউজ ইন্টিরিওর কমিটির চেয়ারম্যান জর্গোস করুল্লাস।
এটি মূলত দ্বীপের উত্তরের মধ্য দিয়ে অবৈধ অভিবাসীদের ঢল থামানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। মূলত দুই সাইপ্রাসের বাফার জোনের মধ্যে কাটাতারের বেড়া থাকলে বর্ডারের অন্যান্য অংশ দিয়ে রাতের অন্ধকারে দালালেরা টাকার বিনিময়ে পারাপারের কাজটি করে থাকেন।
ইউরোপ বাংলার আরও সংবাদঃ