ইউরোপ বাংলা: আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে সমঝোতা করতে মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সরাসরি আলোচনায় বসেন ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তবে এরপরও কোনও সমাধান সূত্র বের হয়নি। সরকার তিনটি বিতর্কিত আইন প্রত্যাহারের ব্যাপারে রাজি না হওয়ায় অনড় রইলেন কৃষক নেতারা। আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, এর জেরে বুধবার (৯ ডিসেম্বর) মোদি সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে কৃষক নেতাদের যে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, তা বাতিল করা হয়েছে।
পাঞ্জাব-হরিয়ানা থেকে অনেক কৃষক ট্রাক্টর নিয়ে রওনা দিয়েছেন দিল্লির পথে। এর মধ্যে বুধবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন বিরোধী দলের নেতা-সাংসদরা। রাহুল গাঁন্ধীর নেতৃত্বে সাংসদরা রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ দাবি করবেন।

দিল্লির সিঙ্ঘু, টিকরি-সহ একাধিক সীমানায় কৃষকদের লাগাতার অবস্থান-বিক্ষোভে চাপে রয়েছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। সেই চাপ আরও বাড়াতে বুধবার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হচ্ছেন বিরোধী সাংসদরা। কংগ্রেস সাংসদ রাহুলের নেতৃত্বে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ার, সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, সিপিআই সাংসদ ডি রাজা-সহ বিরোধীদের ওই প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে তার হস্তক্ষেপের দাবি জানাবেন। তিনটি কৃষি আইন বাতিলের দাবিও জানিয়ে আসবেন রামনাথ কোবিন্দকে।
মোদি সরকার এর আগে ইঙ্গিত দিয়েছিল, এপিএমসি-র বাইরে থাকা মান্ডিতেও সমান কর, ফসল কেনার আগে ব্যবসায়ীদের নথিভুক্তি, চুক্তি চাষে বিবাদে কর্পোরেট সংস্থার বিরুদ্ধে কৃষকদের আদালতে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে সরকার আইনে সংশোধন করতে রাজি। সরকারি ফসল কেনায় এমএসপি-র নিশ্চয়তা দিতেও সরকার তৈরি। কিন্তু কৃষক নেতারা আগের বৈঠকেই সেই প্রস্তাব বাতিল করেন। ওই তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতেই তারা অনড়।

বুধবার সকাল থেকে পাঞ্জাব-হরিয়ানার বহু কৃষক দিল্লির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছেন ট্রাক্টর নিয়ে। ওই আন্দোলনে যারা যোগ দিতে যাচ্ছেন, তাদের দিল্লি-অমৃতসর হাইওয়ের উপর একটি পেট্রোল পাম্প থেকে বিনা পয়সায় ডিজেল দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে শিরোমণি অকালি দল। দলের এক কর্মী বলেন, ‘আরও বেশি মানুষকে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য উৎসাহ দিতে এই ব্যবস্থা করেছি আমরা।
পাঞ্জাব-হরিয়ানার কৃষকরাই শুধু নয়, আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন পাঞ্জাব-হরিয়ানার অধিকাংশ শহুরে নাগরিকও। সোশ্যাল মিডিয়ায় জনমত গঠনে তারা যেমন সরব হয়েছেন, সশরীরেও অনেকে যোগ দিয়েছেন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে।
আরো পড়ুন: নতুন আইনকে ঘিরে রণক্ষেত্র ফ্রান্স, আস্থা হারাচ্ছেন ম্যাক্রন