Wednesday, মে ১, ২০২৪

বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের উড়িয়ে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়

ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : তাসকিনের ব্যাট ছুঁয়ে ক্রিস জর্ডানের বলটি সীমানার দিকে গড়াতেই গর্জে উঠল মিরপুর শেরে বাংলার গ্যালারি। ম্যাচের রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা রূপ নিল বিজায়োৎসবে। ক্রিকেটের খেরো খাতায় লেখা হয়ে গেল নতুন ইতিহাস। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিল বাংলাদেশ! তাও আবার টি-টোয়েন্টিতে, যে ফরম্যাটে বাংলাদেশ সবচেয়ে দুর্বল। দলে ব্যাপক পরিবর্তন এনে টি-টোয়েন্টির নতুন পথচলার শুরুতেই ইতিহাস গড়ে ফেলল সাকিব-হাতুরা বাহিনী। ৪ উইকেটের জয়ে যে কোনো ফরম্যাট মিলিয়েই প্রথমবারের মতো সিরিজ জিতল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।

চেজিংয়ে নেমে বাউন্ডারি মেরে রানের খাতা খোলেন লিটন দাস। তবে বেশিদূর যেতে পারেননি। ৯ রানে স্যাম কারেনের বলে সীমানায় ধরা পড়েন ফিল সল্টের হাতে। রান উঠছিল ধীরে। ৬ষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে রনি তালুকদারকে (৯) হারিয়ে দ্বিতীয় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। শিকারী জোফরা আর্চার। ২৭ রানে নেই ২ উইকেট। পাওয়ারপ্লেতে আসে ৩২ রান। এরপর জমিয়ে ব্যাটিং করছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত আর তৌহিদ হৃদয়। দৃষ্টিনন্দন দুটি বাউন্ডারি হাঁকানো হৃদয় আউট হয়ে যান ১৮ বলে ১৭ রান করে। শান্ত খেলছিলেন দারুণ, রান তোলার চাপ নেই। ২২ রানে আম্পায়ার্স কলে লেগ বিফোর থেকে বেঁচে যান শান্ত। এক বল পরেই আদিল রশিদকে সীমানাছাড়া করেন। পাঁচে নেমে শান্তর সঙ্গী মিরাজ। এই জুটিতেই জয়ের কাছাকাছি পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

তবে ১৬ বলে ২ ছক্কায় ২০ রান করা মিরাজ আর শূন্য রানে অধিনায়ক সাকিব পরপর ফিরলে ম্যাচে টুইস্ট আসে। জয় থেকে ১৩ রান দূরে থাকতে জোফরা আর্চারের ১৪৮ কিলোমিটার গতির একটা বলে আফিফের (২) স্টাম্প উপড়ে প্রায় সীমানার কাছে এসে পড়ে! বাংলাদেশ শিবিরে তখন শংকার মেঘ। তীরে এসে তরী ডুববে না তো? উইকেটে আসেন তাসকিন। ক্রিস জর্ডানকে দারুণ বাউন্ডারিতে সব চাপ দূর করেন শান্ত। একই ওভারে তাসকিনের ব্যাট থেকেও আসে বাউন্ডারি। পরের বলে আরেকটি বাউন্ডারি মেরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন তাসিকন। ৭ বল আর ৪ উইকেট হাতে রেখে। শান্ত অপরাজিত থাকেন ৪৭ বলে ৩ চারে ৪৬* রানের মহাগুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে। আর উইনিং শট খেলা তাসকিন করেন ৩ বলে ২ চারে অপরাজিত ৮* রান। ১৩ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন জোফরা আর্চার।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১১৭ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। তৃতীয় ওভারেই দলীয় ১৬ রানে ব্রেক থ্রু দেন তাসকিন। তার বলে হাসান মাহমুদের তালুবন্দি হয়ে ফিরেন ডেভিড মালান (৫)। ব্যাটিং লাইনআপ বদলে মঈন আলীকে নামানো হয় তিনে। পাওয়ারপ্লেতে আসে ৫০ রান। ৭ম ওভারে বোলিংয়ে আসেন অধিনায়ক সাকিব। তৃতীয় বলেই সাফল্য। অসাধারণ ফিরতি ক্যাচে ১৯ বলে ২৫ রান করা ফিল সল্টকে ফেরত পাঠান বাংলাদেশ অধিনায়ক। এরপর মঞ্চে আসেন হাসান মাহমুদ। এই তরুণ পেসার আজও বোল্ড করে দেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলারকে (৪)। মঈন আলীকে তিনে নামিয়ে লাভ হয়নি ইংলিশদের। ১৭ বলে ১৫ রান করা অল-রাউন্ডারকে ফেরান একাদশে সুযোগ পাওয়া মেহেদি মিরাজ।

১৫তম ওভারে এসে এই স্পিনার জোড়া আঘাত হানেন। ওভারের দ্বিতীয় আর চতুর্থ বলে ফিরিয়ে দেন স্যাম কারেন (১২) আর ক্রিস ওকসকে (০)। দুজনকেই স্টাম্পড করে বড় কৃতিত্বের ভাগীদার উইকেটকিপার লিটন দাস। ৯১ রানে নেই ৬ উইকেট! মিরাজের চতুর্থ শিকার ক্রিস জর্ডান (৩)। শেষ ওভারে বেন ডাকেটকে (২৮) ফেরান মুস্তাফিজুর রহমান। অনেকটা দৌঁড়ে এসে অসাধারণ ডাইভে ক্যাচ নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। চতুর্থ বলে রান-আউট হয়ে যান রেহান আহমেদ (১১)। শেষ বলে জোফরা আর্চার (০) রানআউট হলে ১১৭ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। ৪ ওভারে মাত্র ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন, মুস্তাফিজ, সাকিব এবং হাসান মাহমুদ।

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা