ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : ‘আমার নিজের কোনো বাড়ি নেই।’ ভারতের ছত্তিশগড়ের রায়পুরে কংগ্রেসের ৮৫তম প্লেনারি অধিবেশনে রবিবার বক্তব্য দিতে গিয়ে আবেগঘন হয়ে এ কথা বলেছেনন রাহুল গান্ধী। রাহুল বলেন, ‘সেই ছয় বছর বয়সে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম আমরা। তার পর থেকে আমার কোনো ঘর নেই। ৫২ বছর বয়স হয়ে গেল। এখনও আমার নিজের কোনো বাড়ি নেই।’ এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ছেলেবেলার এক কাহিনি শোনালেন কংগ্রেস সংসদ সদস্য।
রাহুল গান্ধী বলেন, ‘সালটা ১৯৭৭। আমার মাত্র ছয় বছর বয়স ছিল। অনেকটাই ছোট ছিলাম। নির্বাচন কী জিনিস তা বুঝতাম না। দেখলাম বাড়িতে অদ্ভূত এক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মাকে জিজ্ঞাসা করলাম, কী হয়েছে মা? বলল, আমরা বাড়ি থেকে চলে যাচ্ছি। অবাক চোখে তাকিয়ে রইলাম মায়ের দিকে। মা বলল, ওটা না কি আমাদের বাড়িই নয়, সরকারের বাড়ি। সেই থেকে আমার ছেলেবেলার ভুল ভাঙল।’
তিনি আরো বলেন, ‘মাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আমরা তাহলে কোথায় যাব? মা বলেছিল, জানি না। এলাহাবাদেও আমাদের পরিবারের যে বাড়ি রয়েছে, সেটাও আমাদের নয়। ১২ নম্বর তুঘলক রোডের যে বাড়িতে আমরা থাকি সেটাও আমাদের বাড়ি নয়।’ কংগ্রেস সংসদ সদস্য বলেন, ‘ফলে কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীরের জন্য চার মাসের কংগ্রেসের ভারত জোড়া যাত্রা ছিল, সেখানে আমার সঙ্গে হাজার হাজার মানুষ হেঁটেছেন। আমি মনে করেছিলাম, আমার চারপাশে তারা সবাই মিলে ২০-২৫ মিটারের যে বলয় তৈরি করেছে, সেটাই আমাদের ঘর।’
এদিন তিনি আরো বলেন , ‘আমার অনেক আত্মঅহংকার ছিল। আমি বেশ স্বাস্থ্যবান। ১০-১৫ কিলোমিটার অনায়াসেই হাঁটতে পারি। তাই ভাবতাম ২০-২৫ কিলোমিটারও দিব্যি হেঁটে চলে যাব। কিন্ত, কেরালায় যখন রোয়িং করতে গেলাম, হাঁটুর পুরনো ব্যথা জেগে উঠল। বাইরে থেকে ছবিতে আমায় হাসতে দেখা গিয়েছিল। তবে ভেতরে ভেতরে যন্ত্রণায় ছিঁড়ে যাচ্ছিল হাঁটু। তখনই আমায় ভারতমাতা একটি বার্তা দেন। তিনি বলেন, রাহুল আত্মঅহংকার ছাড়ো। যদি মনে করো যাত্রা সম্পন্ন করতে পারবে না তাহলে থেমে যাও। আর যদি মনে জোর থাকে, তাহলে এগিয়ে চলো।’