ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : আম বয়ানের মধ্য দিয়ে টঙ্গীর তুরাগ তীরে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বাদ ফজর বাংলাদেশের মাওলানা জিয়াউল হকের আম বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়।
ইজতেমার মুরুব্বী শহিদুল ইসলাম জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে ফজরের নামাজের পর আম বয়ানের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। আগামী রবিবার (১৫ জানুয়ারি) আখেরি মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে প্রথম পর্ব। এই তিনদিন তাবলীগ জামাতের শীর্ষস্থানীয় মুরুব্বিরা আখলাক, ঈমান ও আমলের ওপর বয়ান করবেন।
তিনি জানান, প্রচুর মুসল্লি উপস্থিত হওয়ায় দুই দিন আগে থেকেই প্রাথমিক বয়ান শুরু হলেও ইজতেমার মূল পর্ব আজ শুক্রবার বাদ ফজর থেকে শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৬০ একরের ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। অনেকেই ময়দানে জায়গা না পেয়ে আশপাশের সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন জেলা থেকে এখনো মুসল্লিরা ময়দানের উদ্দেশ্যে আসছেন।
বিশ্ব ইজতেমার আয়োজক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী আব্দুন নূর জানান, দেশ-বিদেশের লাখো মুসলিম জনতার পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীর। ইতোমধ্যে পুরো ময়দান পূর্ণ হয়ে গেছে। জিকির-আসকারে সময় পার করছেন মুসুল্লিরা।
প্রসঙ্গত, তাবলিগ জামাতের নিজেদের মধ্যে বিরোধের কারণে এবারও বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ১৩ জানুয়ারি (শুক্রবার) থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ইজতেমা পালন করবেন। আর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন জানুয়ারির ২০, ২১ ও ২২ তারিখে। সে হিসেবে এখন যারা মাঠে আছেন বা আসছেন তারা সবাই মাওলানা জুবায়েরপন্থী।
এদিকে তুরাগ নদীর তীরে ইজতেমার নির্ধারিত স্থানে অতিরিক্ত মানুষের কারণে জায়গা সংকুলান হচ্ছে না। শীত উপেক্ষা করে ময়দানের বাইরে ফুটপাতে ও খোলা জায়গায় শামিয়ানা টাঙ্গিয়ে অবস্থান নিয়েছে। মুসল্লিদের কামারপাড়া সড়ক, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ঘেঁষে ফুটপাতে ও মাঠের আশপাশের অবস্থান নিতে দেখা গিয়েছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুই পর্বে পোশাকে, সাদা পোশাকে পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকবেন সাড়ে ৭ হাজার সদস্য। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুুলিশ বিভাগ ১৪টি কন্ট্রোলরুম তৈরি করেছে। র্যাবের কন্ট্রোল রুম থাকবে, ডিএমপি তার এলাকায় কন্ট্রোল রুম খুলেছে, ওয়াচ টাওয়ার, র্যাবের হেলিকপ্টার টহল থাকবে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ বলেন, মুসল্লিদের অনুরোধে আমরা সিটি কর্পোরেশন ৩০ হাজার গজ চটের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। পরিস্কার পরিচ্ছন্নের জন্য ড্রেনেজ ব্যবস্থা, মশা নিধন ঔষধসহ যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হয়েছে।