ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : আজ ১৪ জুন বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে। নিরাপদ রক্ত নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০০৪ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। এবারের দিবস পালনে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে চার লাখ রক্তদাতার সর্বোচ্চ ডোনার পুল নিয়ে মানবিক সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন।
যারা স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদান করে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচাচ্ছেন তাদেরসহ সাধারণ জনগণকে রক্তদানে উৎসাহিত করাই এ দিবসের মূল উদ্দেশ্য। এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো ‘রক্তদান সংঘবদ্ধতারই প্রকাশ, এ কাজে যুক্ত হোন, জীবন বাঁচান’।
দিবসটি উদযাপনে সরকারি-বেসরকারিভাবে নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সকাল ১০টায় জাতীয় জাদুঘর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব পর্যন্ত পথযাত্রা অনিষ্ঠত হবে।
রক্তদাতাদের সম্মাননা জানানো হবে। এছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পালন, রক্তদানে উৎসাহ করতে দাতাদের সৌজন্য উপহার ও থেলাসেমিয়া রোগীদের বিনামূল্যে রক্তদান করা হবে। বিএসএমএমউতে ট্রান্সফিউশন বিভাগের উদ্যোগে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, স্বেচ্ছায় রক্তদাদের সম্মননা, থেলাসেমিয়া আক্রান্তদের বিনামূল্যে রক্ত দান ও উন্মুক্ত সেমিনার হবে।
আবহমানকাল ধরে মানবদেহের জন্য রক্তদান এবং রক্ত গ্রহণের ব্যবহার চলছে। রক্তদান ধর্মীয় দিক থেকেও অত্যন্ত পুণ্য বা সওয়াবের কাজ। বাংলাদেশে জনসংখ্যার তুলনায় রক্তদাতার সংখ্যা এখনো নগণ্য। প্রাপ্ত এক হিসাবে দেশে বছরে ৮ থেকে ৯ লাখ ব্যাগ রক্তের চাহিদা থাকলেও রক্ত সংগ্রহ হয় ছয় থেকে সাড়ে ছয় লাখ ব্যাগ। এ ছাড়া সংগ্রহকৃত রক্তের মাত্র ৩০ শতাংশ আসে স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের থেকে। নিজের পরিবারের সদস্য বা পরিচিতজন না হলে এখনো বেশির ভাগ মানুষ রক্তের জন্য নির্ভর করেন পেশাদার রক্তদাতার ওপর। রক্তের অভাবের কারণে প্রতিবছর বহু রোগীর প্রাণ সংকটের মুখে পড়ে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতিবছর বিশ্বের ৯ কোটি ২০ লাখ মানুষ রক্ত দিয়ে থাকে। তবে উন্নত বিশ্বে স্বেচ্ছায় রক্তদানের হার প্রতি এক হাজারে ৪০ জন হলেও উন্নয়নশীল বিশ্বে প্রতি এক হাজারে চারজনেরও কম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, দেশে অসুস্থ ব্যক্তিদের চিকিৎসায় প্রতি বছর প্রায় সাড়ে ৯ লাখ ব্যাগ রক্ত লাগে। সারা দেশে সরকারিভাবে ২২৩টি ব্লাড ব্যাংক বা রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্র রয়েছে। এছাড়াও দেশে গত তিন বছরে বিভাগ ও জেলার সরকারি হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন কেন্দ্রে (ব্লাড ব্যাংক) ২৩ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৭ জন স্বেচ্ছায় রক্তদাতার রক্ত পরিসঞ্চালন করা হয়েছে।