ইউরোপবাংলা ডেস্কঃবাংলাদেশ দূতাবাস লিসবন, ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে যথাযোগ্য মর্যাদা ও আনন্দমুখর পরিবেশে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করে। সকালে মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব তারিক আহসান দূতাবাস প্রাঙ্গনে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচির সূচনা করেন ।
কোভিড-১৯ অতিমারির ফলে পর্তুগাল সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমিত পরিসরে দূতাবাস প্রাঙ্গনে এ বছরের বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়। যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিজয় দিবস উদযাপনের দ্বিতীয় পর্বে দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও তাদের পরিবারবর্গ অংশগ্রহণ করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান শুরু হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারবর্গ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। অতঃপর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। বাণীপাঠ শেষে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয় দিবসের তাৎপর্যবাহী ভিডিও ক্লিপ প্রদর্শন করা হয়।
মহান বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনায় বক্তাগণ বাঙালীদের জীবনে মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরার পাশাপাশি রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ক্ষেত্র সহ সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরেন। মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব তারিক আহসান তাঁর সমাপনী বক্তব্যে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লক্ষ শহীদ এবং সম্ভ্রম হারানো ২ লক্ষ মা-বোন এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন যে, বিজয়ী দেশের মুক্ত পরিবেশে মানুষের মেধা আর শ্রমকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বিশেষভাবে, গত এগারো বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতি বিশ্বময় স্বীকৃত। তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, করোনা মহামারীর মধ্যেও গত অর্থবছরে ৫% শতাংশের বেশী প্রবৃদ্ধি অর্জন করে বাংলাদেশ একটি দৃষ্টান্ত তৈরী করেছে। মুক্তিযুদ্ধে বাঙ্গালীর বিজয়ের গৌরবকে ধারন ক’রে বিদেশের মাটিতে নিজেদের উন্নত আচরণ আর কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধিতে অবদান রাখার জন্য তিনি সবার প্রতি আহবান জানান। যে মানবিক, উদার, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ সৃষ্টির জন্য লাখো শহীদ আত্মাহুতি দিয়েছেন, সেই বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর সংবিধান বিরোধী যেকোন অপশক্তির বিরুদ্ধে সকল সচেতন নাগরিকের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়ানো প্রয়োজন ব’লে তিনি মন্তব্য করেন। আলোচনা পর্বের শেষে দূতাবাস পরিবারবর্গের অংশগ্রহণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আলোচনা পর্ব শেষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারবর্গ, জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।