ইউরোপবাংলা ডেস্কঃ ফ্রান্সের প্যারিসে স্কুলশিক্ষকের গলা কেটে হত্যার ঘটনায় কট্টরপন্থী ইসলাম, মৌলবাদকে আক্রমণ করে খোদ ইমরানের খানের নিশানা হন এমানুয়েল মাক্রঁন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইসলামোফোবিয়া ছড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী। এহেন সংঘাতের আবহেই খবর, ফ্রান্স জানিয়ে দিয়েছে, পাকিস্তানের মিরাজ ফাইটার জেট, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, অ্যাগস্টা ৯০বি ক্লাস সাবমেরিন আপগ্রেড বা ক্ষমতা-শক্তিবৃদ্ধির কাজ তারা করবে না।
ফ্রান্সের অসম্মতি পাকিস্তানের কাছে ধাক্কার সামিল বলে মনে করা হচ্ছে।চলতি মাসে এর আগে ফ্রান্স ১৮৩ জন পাকিস্তানি নাগরিকের ভিসা প্রত্যাহার করে, যাঁদের মধ্যে ছিলেন পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের প্রাক্তন প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ সুজা পাসার আত্মীয়স্বজনও। পাকিস্তান সহ ইসলামি দেশগুলির ফরাসি পণ্য বয়কটের ডাকে মাথা নত করবে না, এটা বুঝিয়ে দিতেই ফ্রান্সের ওই পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছিল। তাছাড়া ১১৮ জন পাকিস্তানিকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তও ঘোষণা করে ফ্রান্স। ইমরানের ফ্রান্স-বিরোধী হুঙ্কারের সঙ্গে এর প্রত্যক্ষ যোগ আছে বলে জানায় পর্যবেক্ষক মহল।
একটি সূত্রের খবরে জানা যায় , ফ্রান্স কাতারকেও জানিয়ে দিয়েছে, তারা যেন বিমানের ব্যাপারে পাকিস্তানি-বংশোদ্ভূত প্রযুক্তিবিদদের কাজ করার অনুমতি না দেয়। মিরাজ বিমান সংক্রান্ত প্রযুক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার আশঙ্কায় এহেন পদক্ষেপ ফ্রান্সের। যেসব দেশ রাফাল যুদ্ধবিমান কিনেছে, কাতার তাদের অন্যতম।
গত মাসেই মাক্রঁন নিহত হওয়া ফরাসি ইতিহাস শিক্ষক স্যামুয়েল পেটিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে হযরত মোহাম্মদ (সা:) কার্টুন প্রদর্শন সমর্থন করেন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে তিনি পক্ষ নেন। ক্লাসে পড়ানোর সময় হযরত মোহাম্মদ (সা:) ব্যঙ্গচিত্র দেখানোর জন্যই পেটিকে গলা কেটে খুন করেছিল এক যুবক। মাক্রঁ পেটিকে হিরো আখ্যা দিয়ে বলেন, কট্টরপন্থী ইসলামিরা দেশের সামনে বিপদ।
পাল্টা মাক্রঁনের নিন্দা করে ইমরান অভিযোগ করেন, হযরত মোহাম্মদ (সা:) কার্টুন প্রদর্শনে উত্সাহ দিয়ে তিনি ইসলামকে আক্রমণ করছেন। মুসলিমদের কাছে হযরত মোহাম্মদ (সা:) ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ ধর্মদ্রোহিতার সমান।
ফ্রান্স সাম্প্রতিক বছরগুলিতে একাধিক কট্টরপন্থী মৌলবাদী হামলার শিকার হয়েছে। ২০১৫ সালে হযরত মোহাম্মদ (সা:) ব্যঙ্গচিত্র ছাপায় কার্টুন পত্রিকা শার্লি এবদোর দপ্তরে ভয়াবহ আক্রমণ হয়।