Friday, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

আসামির মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে প্রথম রায় বাংলাদেশে

ইউরোপ বাংলা ডেস্ক: পুলিশ হেফাজতে আসামির মৃত্যু। এ নিয়ে নানান রকমের অভিযোগ রয়েছে বাংলাদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে। এবং এই মৃত্যুকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য অনেক চালচাতুরি করা হয়। কিন্তু আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার দিক থেকে বাংলাদেশ নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। পুলিশ হেফাজতে আসামির মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় দেশের ইতিহাসে প্রথম রায় ঘোষণা করা হলো বুধবার। ঐতিহাসিক এই রায় দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এক যুগান্তকারী মাইলফলক স্পর্শ করল বলে মন্তব্য করেছেন আইনজ্ঞরা।

তাদের মতে, এর মাধ্যমে ‘আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন’ কথাটি সত্যিকার অর্থে বাস্তবায়নের পথে পাথেয় হয়ে থাকবে। ২০১৩ সালে ‘নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন’ প্রণয়নের কারণেই এমন রায় সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন তারা। পুলিশ হেফাজতে জনি নামের এক আসামির মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় পল্লবী থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক জাহিদুর রহমান জাহিদসহ তিন জনকে বুধবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য দুজন হলেন- উপপরিদর্শক রাশেদুল ইসলাম ও সহকারী উপপরিদর্শক কামরুজ্জামান মিন্টু। রায়ে জনির পরিবারকে ১৪ দিনের মধ্যে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পড়ুন: পর্তুগালে বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতের বিদায় সংবর্ধনা ও শিক্ষার্থীদের পূনর্মিলনী অনুষ্ঠিত

প্রথমবারের মতো হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশের তিন কর্মকর্তার সর্বোচ্চ কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনা দেশের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠারই প্রমাণ বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। তিনি বলেন, পুলিশ হেফাজতে কারও মৃত্যু হলে দায়ীরা সবসময়ই পার পেয়ে যেত। এর অবসান হওয়া দরকার ছিল। এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠান ক্ষেত্রে আজ থেকে বাংলাদেশ নতুন যুগে প্রবেশ করল। বর্তমান সরকারের সময়ে শুধু কথায় না কাজেও প্রমাণ হলো কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এটা শুরু এখন থেকে চলবে।

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে দেশে সত্যিকার অর্থে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে ২০১৩ সালে ‘নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন’ প্রণয়ন করে। এরপর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনায় একের পর এক মামলা হতে থাকে। যার মধ্যে প্রথম রায় হলো বুধবার। এই রায়ে আমি বলব কঠোর শাস্তিই (যাবজ্জীবন কারাদণ্ড) দেওয়া হয়েছে। আশা করি, হাইকোর্টেও এ রায় বহাল থাকবে।

সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এম আমিন উদ্দিন বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মৃত্যু হলে বাহিনীর কারও ন্যূনতম শাস্তি হতে পারে তা কেউ কখনও চিন্তাই করতে পারেনি। অথচ আজ (গতকাল) এমন একটি ঘটনায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেন আদালত। যা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অগ্রগতিকেই প্রমাণ করে। এ ছাড়া এটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য একটা মেসেজও বটে।

আরো পড়ুন: অক্সফোর্ডের কোভিড টিকার ট্রায়াল বন্ধ স্বেচ্ছাসেবী অসুস্থ

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা