ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : স্মার্ট বাংলাদেশ তৈরি করার কাজটিতে সর্ব প্রথম ভূমিকা পালন করবে আমাদের বিজ্ঞানীরা। তাদেরকেই বলা হয় স্মার্ট দেশ তৈরির মূল কারিগর। কারণ কোনো একটি দেশকে স্মার্ট বলার ক্ষেত্রে প্রথম দেখা হয় সে দেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অবস্থা কেমন। পাশাপশি এটি ওই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে কতটুকু সংযুক্ত রয়েছে। তবেই সে দেশ স্মার্ট হিসেবে পরিচিতি পায়। আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্সের মিলনায়তনে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা।
এ সময় বক্তারা বলেন, ২০৪১ সালে যে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে এখানে তারই সূচনা হলো। এখানে জ্ঞানের জাগরণ ঘটে গেছে। এই জ্ঞানকে এখন সর্বময় কাজে লাগাতে হবে। সব সময়ের জন্য প্রস্তুতি রাখতে হবে। যাতে যেকোনো সময় এই জ্ঞান দিয়ে সকল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয়। তবে এই জ্ঞানের শিক্ষার পাশাপাশি গ্রহণ করতে হবে মানবেতর শিক্ষা।
এই দুই শিক্ষা একত্রিত না হলে কখনোই উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমাদের এগিয়ে যেতে হলে এই দুটো শিক্ষাই প্রয়োজন। অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান মেলায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিও মেলায় অংশগ্রহণ করতে পেরে আমরা নিজেদেরকে গর্বিত মনে করছি। বিভিন্ন জেলা থেকে আগত বিজ্ঞানীদের প্রকল্প দেখে অনেক সময় মুগ্ধ হয়েছি। এ প্রকল্পগুলো থেকে আমরা অনেককিছু শিখতে পেরেছি।
পাশাপাশি আমরা আমাদের প্রকল্পগুলো যেনো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারি তার জন্য এই মেলার আয়োজন কমিটির পক্ষ থেকে আমাদেরকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হয়েছে। এ রকম আয়োজন আরো হলে আমরা নিজেদের মধ্যে বিজ্ঞানকে গভীরভাবে ধারণ করতে পারব। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমরা যে স্বপ্ন দেখেছিলাম আমাদের নতুন প্রজন্ম সেটি বাস্তবায়ন করতে শুরু করে দিয়েছে। আমরা এখন পৃথিবীর বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি। এবং সাফল্যের সঙ্গে আমরা বিজয়ী হয়ে আছি। আমরা প্রমাণ করি বাঙ্গালি জাতি হিসেবে কোন অংশে আমরা কম নয়। আর এটা করার জন্য সবচেয়ে প্রকৃষ্ট হচ্ছে বিজ্ঞান। একটা কোনো কিছু যদি আমরা নতুন আবিষ্কার করতে পারি তাহলে এ দেশ শ্রেষ্ঠতম দেশ হিসেবে রূপান্তরিত হবে। সে চিন্তাগুলো এ খুদে বিজ্ঞানীরা করছেন। এবং সেগুলোকে এখানে নানাভাবে প্রকাশ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
খুদে বিজ্ঞানীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এখন তোমাদের এটা চর্চার মধ্যে রাখতে হবে। চর্চা না থাকলে এই জ্ঞান বেশি দিন থাকে না। দ্রুতই মরে যায়। অনেক কিছু দ্রুত সময়ের মধ্যে বদলে যাবে। সেই বদল সময়ের মধ্যে তোমাদের খাপ খাইয়ে এই দেশ, তোমাদের জীবন ও মানুষের জীবনকে আরো সহজতর করার চেষ্টা চালাতে হবে। তবেই আমরা এগিয়ে যেতে পারব।’
তিন দিনব্যাপী হওয়া এই মেলায় ১২৮ জন শিক্ষার্থী ও নানা বয়সের ৪২ জন অংশগ্রহণ করেন। মেলায় অংশগ্রহণকারীদের উদ্ভাবনগুলো প্রদর্শনীর পাশাপাশি কুইজ ও অলিম্পিয়ার্ড অনুষ্ঠিত হয়। মেলা শেষে অলিম্পিয়ার্ড অংশ্রগহণকারীদের মধ্যে ১০ জন, কুইজে অংশ্রগহণকারীদের মধ্যে ৩টি স্কুল ও প্রদর্শনীতে অংশ্রগহণকারীদের মধ্যে ২৪ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান, বুয়েটের সাবেক উপাচার্য ড. নজরুল ইসলাম ও বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির সহসভাপতি মুনির হাসান সহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।