Monday, এপ্রিল ২৯, ২০২৪

নতুন বিশ্ব ব্যবস্থায় বিদেশি হস্তক্ষেপ আর গ্রহণযোগ্য হবে না : আসাদ

ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ১২ বছরেরও বেশি সময় পর আরব লীগের শীর্ষ সম্মেলনে তার প্রথম ভাষণে বিদেশি হস্তক্ষেপ ছাড়াই মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা সমাধানের একটি ঐতিহাসিক সুযোগ তৈরি হওয়ার কথা বলেছেন।

২০১১ সালের পর প্রথমবারের মতো আসাদ তার আরব প্রতিবেশীদের সঙ্গে এক কাতারে বসেন। তার বিরোধীদের, বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা জানাতে আসাদ তার সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় বলেন, একটি নতুন বিশ্ব-ব্যবস্থা চালু হচ্ছে, যেখানে বিদেশি হস্তক্ষেপ আর গ্রহণযোগ্য হবে না। সিরিয়ার নেতা এর আগে এই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দেশ সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে আলিঙ্গন করেন। যুবরাজ সালমান আশা প্রকাশ করেন, এই শীর্ষ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট আসাদের উপস্থিতি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।

আরব লীগে আসাদের ফিরে আসার রাজনৈতিক হিসেব যাই হোক না কেন, অনেক বিক্ষুব্ধ সিরিয়ানের জন্য তাকে মনে নেওয়া কঠিন হবে। সিরিয়ার নৃশংস গৃহযুদ্ধের জন্য সামান্য বা কোনো ধরনের জবাবদিহিতার আশা তারা করলেও এখন সেটা দুরাশা বলে মনে হচ্ছে। ১২ বছরেরও বেশি সময় পর এই আঞ্চলিক সম্মেলনে এটাই আসাদের প্রথম উপস্থিতি। গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের নৃশংস দমন এবং দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধ, যেখানে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে মনে করা হয়, তার প্রতিক্রিয়া হিসাবে সিরিয়াকে আরব লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল ।

আরব বিশ্বের এই মঞ্চে আসাদের প্রত্যাবর্তন সম্ভব হয়েছে এই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দেশ সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের হস্তক্ষেপে। কিন্তু অন্য দেশগুলো এ ব্যাপারে হতাশা প্রকাশ করেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে তুরস্ক ও উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় আঘাত হানা বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পর আরব প্রতিবেশীদের সঙ্গে সিরিয়ার সম্পর্ক ত্বরান্বিত হয়। সে সময় এক সময়ের শত্রুভাবাপন্ন দেশগুলো সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় মানবিক সাহায্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

অন্যদিকে চীন গত মার্চ মাসে এক শান্তিচুক্তিতে মধ্যস্থতা করে, যাতে সৌদি আরব তার দীর্ঘদিনের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনস্থাপন করে। এ ছাড়াও ইরান রাশিয়ার সঙ্গে মিলে আসাদের বাহিনীকে সিরিয়ার বৃহত্তম শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করে। তবে সিরিয়ার একটি বড় অংশ এখনো তুর্কি সমর্থিত বিদ্রোহী, জিহাদি এবং যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি নেতৃত্বাধীন মিলিশিয়া যোদ্ধাদের দখলে রয়েছে। গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে সিরিয়ার জনসংখ্যা ছিল দুই কোটি ২২ লাখ। সংঘাত শুরু হওয়ার পর এর অর্ধেক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। প্রায় ৬৮ লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং আরো ৬০ লাখ মানুষ শরণার্থী বা বিদেশে আশ্রয়প্রার্থী হয়েছেন।

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা