Sunday, এপ্রিল ২৮, ২০২৪

ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায় সরকার: ফখরুল

ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগের মতো এবারও মামলা-হামলা, সন্ত্রাস ও গায়েবি মামলা দিয়ে বিরোধী দলকে মাঠ ছাড়া করার কাজ সরকার এখনই শুরু করে দিয়েছে। তারা ফাঁকা মাঠে গোল করার মতো এবারও বিনা ভোটে ক্ষমতায় যেতে চায়।

মঙ্গলবার (৯ মে) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি। মির্জা ফখরুল বলেন, ২০২৩ সালের শেষে বা ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার আবারও আগের খেলায় মেতে উঠেছে। আগেরবার তারা বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা, মামলা, গ্রেপ্তার চালিয়ে সম্পূর্ণ পরিস্থিতি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ভোট করেছিল। এবারও একইভাবে এখন থেকে বিরোধী দলকে সম্পূর্ণভাবে মাঠ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য যা যা প্রসেস করা দরকার, সেসব তারা শুরু করেছে।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে তারা নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার পর যা শুরু করেছিল, এবার সেটা অনেক আগে থেকেই শুরু করেছে। মামলা-মোকাদ্দমা, সন্ত্রাস, বিভিন্ন আইনের মধ্য দিয়ে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা করে আবারও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মাঠ থেকে পুরোপুরি সরিয়ে দেওয়ার কাজটি তারা শুরু করেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, শুধু বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে তা কিন্তু নয়। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তারা যেসব মিথ্যা মামলা দিয়েছিল, সেগুলোর চূড়ান্ত রায় দেওয়ার জন্য খুব দ্রুততার সঙ্গে, আইন মন্ত্রণালয় থেকে একটা তালিকা প্রস্তুত করে- সেই অনুযায়ী বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করে সেই দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করতে শুরু করেছে। বিরোধী দলের সিনিয়র নেতাদের এবং যারা চলমান আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাদের কীভাবে মাঠ থেকে সরিয়ে দেওয়া যায় এবং কীভাবে নিরঙ্কুশভাবে তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পারে, সুবিধা নিতে পারে, সেই কাজ শুরু করেছে। তবে এবার ২০১৮ সালের নির্বাচনের মতো সরকার সুবিধা করতে পারবে না বলে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের আপামর জনগণ রাস্তায় নেমে গেছে। আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে বিএনপির ১৭ নেতাকর্মী প্রাণ দিয়েছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা কারও কাছে নালিশ করি না। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এখানে যেসব দেশের মিশন আছে, কাজ করছেন, তাদের সঙ্গে রুটিন আলোচনা হয়। জাতিসংঘের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও সেরকম আলোচনা হয়েছে।

আন্দোলন সম্পর্কে ফখরুল বলেন, আন্দোলন একটা ওয়েবের মতো। এটার গতি কখনও উঠে, আবার কখনও নামে। জনগণের চাওয়া- পাওয়া এবং মতিগতি বুঝেই আন্দোলন করতে হয়। যেমন রোজার মাস, সেই সময়ে আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ রোজা রাখেন। সেই সময়ও আমরা প্রোগ্রাম দিয়েছি। এমনকি রোজায় ইউনিয়ন পর্যায়ে পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি, সমাবেশ হয়েছে। বর্তমানে আমাদের শরিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে, সে আলোচনা প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। খুব শিগগিরই নতুন কর্মসূচি জানতে পারবেন।

বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, নতুন করে খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানসহ জিয়া পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে, চার্জ গঠন করে সাজা দেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার। দলের অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম পিন্টু, লুৎফর জামান বাবর, কাজী সলিমুল হক কামালসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে সাজা দিয়ে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। এছাড়া, বিএনপির জাতীয় পর্যায়ের নেতাদের সাজা দিয়ে, রাজনীতির মাঠ থেকে বিতাড়িত করার লক্ষ্যে, বিগত দিনের দায়ের করা মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়ার জন্য সরকার নতুন করে প্রচেষ্টা শুরু করেছে বলেও দাবি করেন তিনি।

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা