Thursday, মে ২, ২০২৪

রাশিয়া চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের শিকার : বিজয় দিবসে পুতিন

ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি জার্মানির বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের লড়াইয়ের সমতুল্য বলে উল্লেখ করেছেন। মস্কোর রেড স্কয়ারে বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজের সময় পশ্চিমাবিরোধী এক ভাষণে পুতিন রাশিয়াকে এমন এক যুদ্ধের শিকার হিসেবে তুলে ধরেন, যে যুদ্ধ ‘রাশিয়ার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে’। যদিও ইউক্রেন আক্রমণের নির্দেশ পুতিনই দিয়েছেন।

ভ্লাদিমির পুতিন বিজয় দিবসের ভাষণে আরো বলেন, বিশ্ব ‘ইতিহাসে মোড় ঘোরানোর এক সন্ধিক্ষণে’ এসে দাঁড়িয়েছে এবং রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‘প্রকৃত যুদ্ধ’ ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েত যেমন নাৎসিবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল, এখন সেভাবেই রাশিয়া তার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় লড়াই চালাচ্ছে।

পুতিন তার ভাষণে বলেন, রাশিয়া একটা ‘শান্তিপূর্ণ’ ভবিষ্যৎ চায় এবং ‘ঘৃণা ও রাশিয়াভীতির’ বীজ বপনের জন্য তিনি পশ্চিমা দেশগুলোকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব এমনকি পারিবারিক মূল্যবোধও ধ্বংস করে দিচ্ছে। মস্কোয় বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজ এ বছর আগের তুলনায় কিছুটা ম্লান হলেও বেলারুশ এবং মধ্য এশিয়ার কিছু দেশসহ সাবেক সোভিয়েত দেশগুলোর কিছু নেতা তাতে যোগ দেন।

বিবিসির রাশিয়া বিষয়ক সম্পাদক জানাচ্ছেন, এবারের কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়া সেনার সংখ্যা ছিল কম। গত বছর কুচকাওয়াজে অংশ নেয় ১১ হাজার সেনা। এবার সেই সংখ্যা ছিল আট হাজার। ট্যাংকসহ আধুনিক সামরিক সরঞ্জামাদিও প্রদর্শিত হয়েছে তুলনামূলকভাবে কম এবং ফ্লাই-পাস্ট বা বিমানবাহিনীর প্রদর্শনও ছিল অনুপস্থিত। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে নাশকতামূলক হামলার আশঙ্কায় কিছু কিছু প্রথাগত অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। রাশিয়া ৯ মে বিজয় দিবস পালন করে থাকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিজয়ের স্মরণে।পুতিন ইউক্রেনের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে নাৎসিদের সঙ্গে তুলনা করে বলেন, ‘পশ্চিম ভুলে গেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসিদের কারা পরাজিত করেছিল।’

রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, পূর্ব ইউক্রেনের জনগণকে রক্ষা করা এবং ওই অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাশিয়া নিয়েছে। “রাশিয়ার প্রত্যেকটি মানুষ ইউক্রেনে চলমান ‘বিশেষ রুশ সামরিক অভিযানে’ অংশ নেওয়া সেনাদের সমর্থনে ঐক্যবদ্ধ। রুশ জনগণের উদ্দেশ্যে পুতিন বলেন, ‘আমাদের মাতুভূমির ভাগ্য নির্ধারণ করে যে যুদ্ধ, তা সব সময়ই একটা জাতীয় লড়াই এবং সব সময়ই তা পবিত্র।’

তিনি আরো বলেন, সেই লড়াইয়ের চেয়ে ‘বেশি গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু হতে পারে না।’ সম্মুখ রণাঙ্গনে যারা লড়ছে তাদের ওপরই নির্ভর করছে রাশিয়ার ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা। রেড স্কয়ারে কুচকাওয়াজে অংশ নেওয়া সেনাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সবাই আপনাদের জন্য প্রার্থনা করছেন।’রুশ প্রেসিডেন্ট তার ভাষণ শেষ করেন এই বলে, ‘মাতৃভূমির প্রতি আমাদের ভালোবাসার চেয়ে শক্তিশালী বিশ্বে আর কিছু নেই।’ ভাষণ শেষে তিনি উচ্চারণ করেন। ‘জয় আমাদের, হুররে!’

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা