Monday, এপ্রিল ২৯, ২০২৪

সুদান যুদ্ধ : যুদ্ধবিরতিতে সম্মত দুই পক্ষ

ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : সুদানে যুদ্ধরত দলগুলো ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি দিতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন। স্থানীয় সময় সোমবার মধ্যরাত থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ সুদানে ১৫ এপ্রিল সহিংসতা শুরু হয়। সুদানে লড়াই শুরু হওয়ার পর এই তৃতীয় দফার মতো যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এলো। এর আগের দুই দফা চেষ্টা কার্যকর করা যায়নি।

ব্লিংকেন জানিয়েছেন, প্রায় ৪৮ ঘণ্টা ধরে আলোচনার পর সেনাবাহিনী এবং মিলিশিয়া র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। গত ১৫ এপ্রিল সুদানে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত অন্তত ৪০০-এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে জাতিসংঘের কর্মীও রয়েছেন বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে।

তবে ধারণা করা হচ্ছে, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়েও অনেক বেশি। দেশটির বেশির ভাগ হাসপাতাল বন্ধ। পানি ও বিদ্যুতের সরবরাহ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। আটকে পড়া লোকজনের বাড়িতেও খাবারের মজুদ দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। এ কারণে দেশটিতে মানবিক সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সুদানে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে জেনারেলদের একটি কাউন্সিল দেশটি পরিচালনা করছে। এই কাউন্সিলের শীর্ষ দুই সামরিক নেতাকে ঘিরেই চলছে লড়াই। এরা হলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং দেশটির উপনেতা ও আরএসএফ কমান্ডার জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালো। এই দুই জেনারেল দেশটি পরিচালনা করে আসছিলেন।

কিন্তু একপর্যায়ে আগামীতে দেশটি কিভাবে পরিচালিত হবে এবং দেশটির বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাবনা নিয়ে এই দুই নেতার মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। প্রায় এক লাখ সদস্যের র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে সেনাবাহিনীতে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং তার পরে নতুন এই বাহিনীর নেতৃত্বে কে থাকবে তা নিয়েই মূলত এই বিরোধ।

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেস সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, সুদানের এই সহিংসতা পুরো এলাকার জন্য বিপর্যয়কর হয়ে উঠতে পারে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই খার্তুমের বাসিন্দাদের ঘরের ভেতরে থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সেখানে খাবার ও পানির সরবরাহ অনেক সীমিত হয়ে পড়েছে। এমনকি অনেক মানুষ নাইল নদীর পানি খেতে বাধ্য হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, যুদ্ধবিরতির ফলে খার্তুমের বাসিন্দারা শহর ছাড়ার সুযোগ পাবে। সেই সঙ্গে বিদেশি নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে। খার্তুমে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় কূটনীতিক এবং বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ। ব্লিংকেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র খার্তুমে কূটনীতিক উপস্থিতি আবার চালু করার কথা ভাবছে, কিন্তু সেখানকার পরিস্থিতি ‘খুবই চ্যালেঞ্জিং’ বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা