Tuesday, মে ২০, ২০২৫

প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৭০০ কোটি টাকা চান ব্যবসায়ীরা

ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : করোনাভাইরাসের ধকলের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মন্দায় যখন টালমাটাল সাধারণ মানুষের জীবন, এ সময় ঈদের বাজার স্বপ্ন জাগিয়েছিল রাজধানীর বঙ্গবাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। একটু বেশি বেচাবিক্রি করে নতুন করে ঘুরে দাঁড়াবেন তাঁরা। গত দুই বছর ধরে আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে নেওয়া ধারদেনা শোধ করবেন। কিন্তু আগুনে পুড়েছে তাঁদের সব স্বপ্ন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বঙ্গবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য সরকারের কাছে ৭০০ কোটি টাকার থোক বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত খান এন্টারপ্রাইজের দোকানি টিনন খান তাঁর ভেঙে যাওয়া স্বপ্নের কথা জানান। টিটন খান বলেন, ‘দোকান ও গোডাউন মিলে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মালপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমার। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ঈদ উপলক্ষে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের কাছ থেকে ধার নিয়ে মাল কেনা হয়েছিল। এসব মাল ডেলিভারি দেওয়ার সময় এমন ক্ষতির মুখে পড়তে হলো আমাকে।’

লিমন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘নিঃস্ব হয়ে গেলাম। ৯টা দোকান ছিল। সব আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার সব ধ্বংস হয়ে গেছে। ঈদ উপলক্ষে প্রায় ১৫ লাখ টাকার মালপত্র তুলেছিলাম দোকানে। কিন্তু মুহূর্তেই সব পুড়ে ছাই।’ লিমনের মতো অন্য ব্যবসায়ীরাও ঈদ সামনে রেখে দোকানে নতুন মালপত্র তুলেছিলেন। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ছুটে আসেন আব্দুর রহমান সাদ্দাম নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, ‘আগুনের ধোঁয়া দেখে আমার দোকানের কর্মচারীরা মালপত্র সরাতে গেলেও পারেনি। সব পুড়ে গেছে। রমজানের আট-দশ দিন কোনো বেচাবিক্রি হয়নি। এক লাখের বেশি গেঞ্জি ছিল। সব শেষ।’

বাংলাদেশ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বঙ্গবাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য সরকারের কাছে ৭০০ কোটি টাকার থোক বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘শুধু বঙ্গবাজার নয়, এই অগ্নিকাণ্ডের ফলে সারা দেশের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ সময় দেশের অনেক ব্যবসায়ী টাকা দিয়েছিলেন, অনেকে মালপত্র নেবেন এবং কেউ কেউ পণ্য ডেলিভারি দেবেন। এই অগ্নিকাণ্ড তাঁদের চরম ক্ষতির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এই অবস্থা থেকে সাময়িকভাবে ঘুরে দাঁড়াতে সরকারের কাছে এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য পাঁচ থেকে সাত শ কোটি টাকার থোক বরাদ্দের দাবি জানাই আমরা।’ এ ছাড়া অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত দোকান যেন বেহাত না হয়ে যায়, সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান মো. হেলাল উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবাজারের চারটি মার্কেটে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার দোকানে এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান ছিল। বঙ্গবাজারের অগ্নিকাণ্ডে আনুমানিক সব মিলিয়ে দুই হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।’

বঙ্গবাজার হকার্স মার্কেট দোকান মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের সমিতির সদস্য সংখ্যা দুই হাজার ৯৬১ জন। এসব সদস্যের সব দোকান আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। কিছুই নেই। তাঁরা আশা করছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসবেন।’

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা