Friday, মে ৩, ২০২৪

শ্রমিক সংগঠনের বিশাল পরিবহন ধর্মঘট, স্তব্ধ জার্মানি

ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : শ্রমিক সংগঠনের ডাকে বিশাল ধর্মঘটে গোটা দেশ প্রায় স্তব্ধ হয়ে গেছে। মূল্যস্ফীতির মুখে বেতন ও মজুরি বাড়াতে এভাবে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। রবিবার মাঝরাত থেকে সোমবার মাঝরাত পর্যন্ত জার্মানিতে জনজীবন প্রায় স্তব্ধ করে দিতে বিশাল ‘সতর্কতামূলক’ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে পরিষেবা ক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শ্রমিক সংগঠন ভ্যার্ডি এবং রেল ও পরিবহণ ক্ষেত্রের শ্রমিক সংগঠন ইভিজি। ভ্যার্ডির সদস্য সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ এবং ইভিজির প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার। সরকার ও পৌর স্তরের শ্রমিক-কর্মীদের জন্য মোটা অংকের বেতনবৃদ্ধির দাবি করছে তারা। ভ্যার্ডি ১০ দশমিক পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধি চাইছে, ইভিজি চাইছে ১২ শতাংশ। সোমবারই মালিক ও শ্রমিক পক্ষের মধ্যে দরকষাকষি আবার শুরু হবার কথা।

ভ্যার্ডির মতে প্রথমে করোনা মহামারি, তারপর ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় মূল্যস্ফীতির কারণে শ্রমিক-কর্মীদের দূরাবস্থা অন্তত কিছুটা হলেও লাঘব করতে এই দাবি ন্যায্য। উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক কালে গোটা দেশে বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন অঞ্চল ও ক্ষেত্রে ধর্মঘটের মাধ্যমে কর্মদাতাদের উপর চাপ সৃষ্টি করে আসছে শ্রমিক সংগঠন। ভ্যার্ডি এর প্রধান ফ্রাংক ভ্যার্নেকে বলেন, এটা হাজার হাজার কর্মীর বেঁচে থাকার প্রশ্ন।

অন্যদিকে সরকার ও পৌর স্তরের প্রতিষ্ঠানগুলো শ্রমিক সংগঠনের এই দাবিকে অবাস্তব বলে বর্ণনা করছে। তাদের মতে, সরকারি কোষাগারে এমন অস্বাভাবিক বেতনবৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট অর্থ নেই। বিশেষ করে পরিবহণ ক্ষেত্রে বেতন বেশি বাড়ালে ভাড়া ও বাড়তি কর চাপিয়ে সেই অর্থ সংগ্রহ করতে হবে। জার্মানির রেল সংস্থা ‘ডয়চে বান’ এই ধর্মঘটকে ‘সম্পূর্ণ মাত্রাহীন, ভিত্তিহীন ও অপ্রয়োজনীয় হিসেবে বর্ণনা করেছে।

ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে রাশিয়া থেকে সস্তায় গ্যাস সরবরাহ কার্যত বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে জ্বালানির দাম হুহু করে বেড়ে গেছে। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় বস্তুর মূল্য থেকে শুরু করে বাসাভাড়া এক ধাক্কায় অনেকটা বেড়ে গেছে। জ্বালানি সংকট দেখা না দিলেও মূল্যস্ফীতির রাশ টান টানতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউরো এলাকার তুলনায় জার্মানির মূল্যস্ফীতির হার বেশি থেকেছে। ফেব্রুয়ারি মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম গত বছরের তুলনায় নয় দশমিক তিন শতাংশ বেশি ছিল। সোমবারের ধর্মঘটের ফলে সাধারণ মানুষ ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন। বিশেষ করে বাসায় থেকে ‘হোম অফিস’ করার সুবিধা যাদের নেই, তাদের জন্য কর্মক্ষেত্রে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।

জার্মানির হাইওয়ে পরিচালন সংস্থার কর্মীরাও ধর্মঘটে যোগ দেওয়ায় অনেক হাইওয়েতে অবরোধের আশঙ্কা রয়েছে৷ ভ্যার্ডি এর প্রধান ভ্যার্নিকে মানুষের দুর্দশার কথা মেনে নিয়েও বর্তমান পরিস্থিতিতে শ্রমিক ও কর্মীদের ন্যায্য দাবি আদায় করতে এ ছাড়া কোনো উপায় নেই বলে মন্তব্য করেন। পণ্যের পরিবহনে বিঘ্ন এড়াতে জার্মানির পরিবহণমন্ত্রী ফল্কার ভিসিং রোববার ট্রাক চালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা