Friday, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

সক্ষম সবাইকে কর প্রদানের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : দেশবাসীকে কর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে উঠতে করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি আরো কর সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘শুধু রাজধানী বা শহরে নয়, সারা দেশে কর দিতে সক্ষম যারা, দয়া করে আপনার কর পরিশোধ করুন। সরকার আপনার পরিষেবা এবং কল্যাণে আপনার অর্থ ব্যবহার করবে।’

আজ রবিবার রাজস্ব ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের লক্ষ্যে দেশের প্রথম দুই দিনব্যাপী রাজস্ব সম্মেলন-২০২৩ উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, সমগ্র বিশ্ব এখন অর্থনৈতিক মন্দা এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যার প্রভাব বাংলাদেশের ওপরও পড়েছে। তিনি আরো বলেন, ‘কাজেই, আমাদের সেগুলির (অর্থনৈতিক মন্দা এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির হার) মোকাবেলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। আমরা যত বেশি ট্যাক্স সংগ্রহ করব, ততই এটি অতিক্রম করা সহজ এবং সম্ভব হবে।’

প্রধানমন্ত্রী করের পরিমাণ বাড়ানোর পরিবর্তে করদাতার সংখ্যা সম্প্রসারণে আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করতে এবং জনগণকে কর দিতে উদ্বুদ্ধ করতে সারা দেশে ব্যাপক সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা শুধু রাজধানীকেন্দ্রিক নয়, সারা দেশেই আমি সকলকে বলব, যারা কর দেওয়ার সামর্থ্য রাখেন, আপনারা দয়া করে কর দেবেন। সেটা আপনাদের সেবায়ই সরকার কাজে লাগাবে।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা, আজকে প্রতিটা জিনিসের দাম বেড়েছে। আজকে তেল, গ্যাস, গম, ভোজ্য তেল, চিনিসহ প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। আমাদের আওয়ামী লীগ সরকার তা সত্ত্বেও এগুলো অধিক মূল্যে কিনে নিয়ে আসছে। সেখানে পরিবহন ব্যয়ও বেড়েছে, ৮০০ ডলারের জাহাজ ভাড়া এখন তিন হাজার ৮০০ ডলার। আমরা ভর্তুকি দিয়ে অধিক মূল্যে কিনে এনে তা কম মূল্যে দেশের মানুষকে দিচ্ছি।’ এক কোটি মানুষ টিসিবির কার্ড পেয়েছে, সেখানে ভর্তুকি মূল্যে মানুষকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহ করা হচ্ছে।’ কৃষিতে তার সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে, করোনাকালীন ব্যবসায়ীদের শিল্প ও কলকারখানা চালু রাখার জন্য তার সরকার প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছে। এভাবেই সরকার দুঃসময়ে তার ভর্তুকি অব্যাহত রেখেছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। সরকারপ্রধান বলেন, ‘এখন সরকার যাতে রাষ্ট্র চালাতে পারে বা মানুষের জন্য কাজ করতে পারে সেদিকে সকলকে দৃষ্টি দিতে হবে। কারণ ভর্তুকি আমরা আর কত দিতে পারব। তা ছাড়া আমাদের উন্নয়ন কাজগুলো যাতে ব্যাহত না হয় সেদিকেও দেখতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আপনারা উপজেলা বা ইউনিয়ন পর্যায়ে যদি যান, যে পরিবর্তন হয়েছে গত ১৪ বছরের সেই পরিবর্তনটা আপনারা দেখতে পাবেন।’ তিনি জানান, এখন আর কেউ কুঁড়েঘরে বাস করে না, ভূমিহীন-গৃহহীন প্রত্যেককে তার সরকার বিনে পয়সায় ঘর তৈরি করে দিচ্ছে। আর্থিক সহায়তা দিয়ে জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুযোগও করে দেওয়া হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছে, যেখানে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের তৃণমূল পর্যায়েরও উন্নয়ন নীতির কারণে উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়েও অর্থনীতির গতিশীলতা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি এটুকু বলতে পারি যে গত ১৪ বছরে আমূল পরিবর্তন এসেছে। করদানের সক্ষমতা কিন্তু আমাদের উপজেলা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়েও রয়েছে। সেখানে আমরা যদি একটু প্রচার-প্রচারণা ভালোভাবে চালাই তাহলে মানুষ কিন্তু স্বতঃস্ফূর্তভাবে আসবে। কারণ তারা তো সেবা পাচ্ছে। এই সেবাটা পাওয়ার জন্যই তারা এটা করবে।

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা