Tuesday, মে ২০, ২০২৫

আইএমএফের ঋণ শর্ত নিয়ে টিআইবির উদ্বেগ

ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : বাংলাদেশকে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ প্রদানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কিছু শর্তের বৈষম্যমূলক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। দুর্নীতি ও অর্থপাচারের বিরুদ্ধে নিজস্ব নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণে আন্তর্জাতিক এই ঋণদাতা সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি। গতকাল শনিবার টিআইবির পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ উদ্বেগের কথা জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জ্বালানি, সার, বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তুকি সংস্কারের মতো কিছু শর্তের সম্ভাব্য অসম প্রভাবের বিষয়ে আইএমএফ প্রতিনিধিদলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে টিআইবি জানায়, শর্তের পুরো প্যাকেজকে এমনভাবে সাজানো উচিত যাতে এরই মধ্যে অতিরিক্ত চাপে থাকা সাধারণ মানুষের ওপর বৈষম্যমূলক প্রভাব আরও বেড়ে না যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আইএমএফ প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশের নিম্ন কর-জিডিপি অনুপাত নিয়ে উদ্বেগ যথার্থ। কিন্তু প্রধানত ভ্যাটের ওপর আইএমএফ-এর প্রস্তাবিত কৌশলের নির্ভরতা উদ্বেগজনক, যার বৈষম্যমূলক প্রভাব সর্বজনবিদিত। অন্যদিকে, শর্তসমূহে ব্যাপক কর ফাঁকি এবং অর্থ পাচার, বিশেষ করে মিস ইনভয়েসিং-ভিত্তিক অবৈধ অর্থ পাচার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সম্ভাব্য পদক্ষেপের কোনো ইঙ্গিত নেই। দেশে ও দেশের বাইরে আর্থিক লেনদেনের তথ্যের স্বয়ংক্রিয় আদান-প্রদানের জন্য কমন রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (সিআরএস) গ্রহণ করা গেলে এসব দুর্নীতি ও অর্থ পাচার রোধ করা সম্ভব হতো।

বৈশ্বিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানটির নীতিগত বাধ্যবাধকতার কথা উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ঋণ আলোচনায় আইএমএফ নিজস্ব নীতি বিশেষ করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং দুর্নীতি ও অর্থ পাচার প্রতিরোধে কার্যকর কৌশলগত বিষয়ে মনোযোগ দিতে হতাশাজনকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। উল্লিখিত পদক্ষেপগুলো না নিয়ে তৈরি করা শর্তের প্যাকেজ কাঙ্খিত উদ্দেশ্য অর্জন করবে এমন সম্ভাবনা কম। বরং এর মাধ্যমে ইতিমধ্যে অতিরিক্ত চাপে থাকা দেশের সাধারণ মানুষের ওপর বৈষম্যমূলক প্রভাবের বাড়তি বোঝা তৈরি হবে।

তিনি আরও বলেন, আইএমএফ দুর্নীতি এবং অর্থ পাচাররোধে সুনির্দিষ্টভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা আশা করি, আন্তর্জাতিক ঋণদাতা এই প্রতিষ্ঠান নিজেদের সম্পর্কে যা প্রচার করে, তা অনুশীলনও করবে। আইএমএফ-এর ঋণ প্রদান ব্যবসার অপরিহার্য বাস্তবতা হচ্ছে তাদের দেয়া শর্তসমূহ, যা প্রায়শই কঠিন এবং অপ্রীতিকর হয়। তবে প্রশ্ন হলো, শর্তের প্যাকেজ কি জনস্বার্থকে প্রাধান্য দেয় নাকি তা জনগণের জন্যই বিপরীতমুখী ফল বয়ে আনে?

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা