Saturday, এপ্রিল ২০, ২০২৪

আল-কায়েদা প্রধান জাওয়াহিরি নিহত

ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : আফগানিস্তানে ড্রোন হামলা চালিয়ে আল-কায়েদার প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরিকে হত্যা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিবিসি জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। গত রবিবার আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে সিআইএ পরিচালিত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে তিনি নিহত হন। জো বাইডেন বলেছেন, আইমান আল-জাওয়াহিরি মার্কিন নাগরিকদের বিরুদ্ধে হত্যা ও সহিংসতা চালিয়েছেন। এখন বিচার হয়েছে এবং এই সন্ত্রাসী নেতা মারা গেছেন। গতকাল সোমবার বিকেলেই এপি জানিয়েছিল, মার্কিন ড্রোন হামলায় আল-কায়েদার বড় কোনো নেতার মৃত্যু হয়েছে। বাইডেন প্রশাসনের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা গতকালই জানিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানে কোনো বেসামরিক ব্যক্তি হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

৭১ বছর বয়সে সিআইএর হাতে মারা পড়লেন জাওয়াহিরি। ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর ১১ বছর পরও এই গোষ্ঠী যে সন্ত্রাসবাদের আন্তর্জাতিক প্রতীক হিসেবে থেকে গেছে, তা তারই কৃতিত্ব। একসময় ওসামা বিন লাদেনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছিলেন জাওয়াহিরি। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে সরাসরি জাওয়াহিরিকে ধরার বিষয়ে তথ্য দেওয়ার জন্য দুই কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার পর্যন্ত পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। ২০২১ সালের জুন মাসে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, জাওয়াহিরি আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী কোনো অঞ্চলে বসবাস করছেন। তার শরীর অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাই তাকে প্রচারে ভিডিওতে দেখানো হচ্ছে না।

নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, জাওয়াহিরি একজন বিশিষ্ট মিসরীয় পরিবারের মানুষ। তার দাদা, রাবিয়া আল-জাওয়াহিরি ছিলেন কায়রোর আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ইমাম। তার মামা আবদেল রহমান আজম ছিলেন আরব লীগের প্রথম সচিব। যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে সবচেয়ে মারাত্মক সন্ত্রাসবাদী হামলা, অর্থাৎ টুইন টাওয়ার বা ৯/১১ হামলার পরিকল্পনাতেও সাহায্য করার অভিযোগ রয়েছে জাওয়াহিরির বিরুদ্ধে।

ওই ভয়াবহ হামলার বিষয়ে ২০০২ সালের এপ্রিলে প্রকাশিত একটি ভিডিও বার্তায় জাওয়াহিরি বলেছিলেন, যে ১৯ জন ভাই মৃত্যুবরণ করেছেন এবং সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে তাদের আত্মাহুতি দিয়েছেন, সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাদের বিজয় দান করেছেন। যা আমরা এখন উপভোগ করছি। ২০১১ সালে মার্কিন সেনার হাতে ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর পর জাওয়াহিরিই আল-কায়েদার সর্বোচ্চ নেতা হয়েছিলেন। ২০০১ সালের ওই হামলার পর আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা অভিযান শুরু হওয়ার পর জাওয়াহিরি আফগানিস্তানের তোরা বোরা অঞ্চলে মার্কিন হামলার হাত থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিলেন।

তবে ওই হামলায় তার স্ত্রী ও সন্তানের মৃত্যু হয়েছিল। তারও অনেক আগে ১৯৮১ সালে মিসরীয় প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাতের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন তিনি। সেটাই ছিল জঙ্গি হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ। তার আগে ডাক্তারি পড়েছিলেন জাওয়াহিরি। পড়তে পড়তেই মিসরীয় সরকারকে উৎখাত করে মৌলবাদী শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ষড়ষন্ত্র শুরু করেছিলেন। সাদাত হত্যার দায়ে তিন বছর কারাগারে কাটানোর পর মুক্তি পেয়ে তিনি পাকিস্তানে চলে গিয়েছিলেন। আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত মুজাহিদীন যোদ্ধাদের চিকিৎসা শুরু করেছিলেন তিনি। সেই সময়ই বিন লাদেনের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল তার।

১৯৯৮ সালে জাওয়াহিরি তার নিজের মিসরীয় ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠীকে আল-কায়েদার সঙ্গে একীভূত করে দিয়েছিলেন। তারপর বিভিন্ন দেশে মার্কিন দূতাবাস ও অন্যান্য মার্কিন স্থাপনায় হামলার পেছনে ছিল তার ইন্ধন।

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা