Friday, এপ্রিল ২৬, ২০২৪

‘ঢাকায় যাদের জমি-ফ্ল্যাট আছে সবাই ‘কালোটাকার মালিক’

ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : ঢাকা শহরে যাঁদের জমি বা ফ্ল্যাট আছে, তাঁরা সবাই এক অর্থে ‘কালোটাকার মালিক’ বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে এ পরিস্থিতির জন্য সরকার ও বিদ্যমান ‘সিস্টেম’ বা ব্যবস্থাকে দায়ী করেন তিনি। বুধবার দুপুরে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক ও সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চ্যুয়াল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজধানীর গুলশান এলাকায় জমির যে দাম দেখিয়ে নিবন্ধন করা হয়, জমির প্রকৃত দাম তার চেয়েও বেশি। কিন্তু বেশি দামে তো নিবন্ধন করানো যায় না, প্রতিটি মৌজার জন্য দাম ঠিক করে দেওয়া আছে, এর বেশি দামে নিবন্ধন করা যাবে না। সুতরাং কালোটাকা তো সেখানেই সৃষ্টি হচ্ছে; কে কালো টাকার বাইরে আছে।
তিনি বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে, যে ফ্ল্যাট দুই কোটি টাকায় নিবন্ধিত হচ্ছে, সেই ফ্ল্যাটের প্রকৃত দাম ১০ কোটি টাকা। ফলে সরকার বাড়তি নিবন্ধন মাশুল পাচ্ছে না। এখানেই কালোটাকা সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়গুলো সবাইকে বুঝতে হবে। ঢাকা শহরে যাঁর জায়গা আছে কিংবা যে ব্যক্তি জায়গা কিনেছেন, শুধু তিনিই বলতে পারবেন, কত টাকায় নিবন্ধন হয়েছে এবং জমির প্রকৃত বাজারদর কত?

পাচার হওয়া অর্থ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, পাচার হওয়া টাকা যখন দেশে ফেরত আসবে, তার একটি অংশ পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ হবে; বিভিন্ন শিল্পকারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগ হবে-এ প্রত্যাশায় আমরা সেদিকে নজর দিচ্ছি।
তিনি বলেন, যখন বিদেশে পাচার হওয়া কালোটাকা দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি, তখন বলা হচ্ছে, সরকার নাকি কালোটাকা সাদা করার ক্ষেত্রে প্রশ্রয় দিচ্ছে। আমি বারবার বলি, এটা অপ্রদর্শিত টাকা, এখানে লাজলজ্জার কিছু নেই; সরকার এ জন্য দায়ী। আমিও একসময় দায়িত্বে ছিলাম। ঢাকা শহরে জমির দাম বাড়ানো যায় কি না, সেটা নিয়ে চিন্তা করলেও শেষ পর্যন্ত দাম বাড়াতে পারিনি। যে দাম ছিল, এখনো সে দামই আছে।

পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপের বিষয়ে চাপে আছেন কি না, তা জানতে চাইলে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমি কোনো রকম চাপে নেই। আমি যা বলেছি, তা করব। আমি অর্ধেক রাস্তা থেকে ফিরে আসি না। আমি যখন রেমিট্যান্সের ওপর প্রণোদনা দিয়েছি, তখন অনেক সমালোচনা ছিল; বলা হয়েছিল, টাকা আসবে না, কিছু হবে না, টাকা পাচার হবে। কিন্তু এসেছে। শুধু আসেইনি, ঐতিহাসিক রেকর্ডও হয়েছে।

পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা নিয়ে বিভিন্ন মহলের সমালোচনার জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাস্তবতার সঙ্গে মিল রেখে আলাপ-আলোচনা করা হলে তা বস্তুনিষ্ঠ হয়। এদিকে জ্বালানি তেলের দাম আবার বাড়ানো হতে পারে কি না, এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি চূড়ান্ত হয়নি। হলে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। তবে সরকার চায়, সাধারণ মানুষের কষ্ট যেন কম হয়; কিন্তু দাম বেশি বাড়লে মানুষের ওপর কিছুটা চাপাতে হয়, তা না হলে সরকারই তা বহন করে।

শেয়ারবাজার প্রসঙ্গে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, শেয়ারবাজার নিয়ে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। বাজেট যা ঘোষণা করা হলো, তা বাস্তবায়ন এখনো শুরু হয়নি। শুরু হবে আরও পরে। আমি মনে করি, আমাদের অর্থনীতি অনেক ভালোভাবে চলছে। প্রতিটি সূচকে আমরা বিশ্বের মধ্যে অনেক ভালো অবস্থানে আছি। পুঁজিবাজার ওঠানামা স্বাভাবিক নিয়ম। তবে এটি ভালোভাবে চলুক, আমরা সেটাই চাই।

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা