Tuesday, এপ্রিল ১৬, ২০২৪

মারা গেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ।

ডেস্ক রিপোর্টঃ মারা গেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় ৬ টা ৩০ মিনিটে মারা গেছেন বিএনপির এই শীর্ষ নেতা (ইন্নানিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাহে রাজেউন)  বিএনপির প্রেস উইং থেকে মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ২ ফেব্রুয়ারি মওদুদ সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ চার্লস থোর তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার স্ত্রী হাসনা মওদুদও সিঙ্গাপুর রয়েছেন।

রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ হ্রাস ও বুকে ব্যথা অনুভব করলে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর মওদুদকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি সেখানে ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদারের অধীনে চিকিৎসা নেন। হার্টে ব্লক ধরা পড়ায় তার হৃদযন্ত্রে স্থায়ী পেসমেকার বসানো হয়। এরপর ১৩ জানুয়ারি হাসপাতালটির সিসিইউ থেকে তাকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। 

পরে ২০ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকে বাসায় নেওয়া হয়। এরপর আবার ২১ জানুয়ারি তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টায় সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে দেশ ছাড়েন মওদুদ আহমদ।

গত সপ্তাহে ম ওদুদ আহমেদকে আইসিইউতে নেওয়া হয়।

মওদুদ আহমেদ বিএনপির ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম, সাবেক সাংসদ ও অষ্টম জাতীয় সংসদে তিনি আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। জিয়াউর রহমান ও এরশাদের শাসনামলে মওদুদ আহমেদ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। এরশাদ তাঁকে প্রধানমন্ত্রীও করেন।

মওদুদ আহমেদ ১৯৪০ সালের ২৪ মে নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মাওলানা মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং মা বেগম আম্বিয়া খাতুন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে মওদুদ আহমেদ চতুর্থ।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ করে লন্ডনের লিঙ্কন্স ইন থেকে ব্যারিস্টার-এ্যাট-ল’ ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি দেশে ফিরে আসেন এবং হাইকোর্টে ওকালতি শুরু করেন। তিনি ব্লান্ড ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়েও কর্মরত ছিলনে।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ব্যারিস্টার মওদুদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১-এ ইয়াহিয়া খান আহুত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি বঙ্গবন্ধু  শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ছিলেন।

১৯৭৭-৭৯ সালে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারের মন্ত্রী ও উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৭৯ সালে তিনি প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং তাকে উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। এরশাদের আমলে ১৯৮৫ এর নির্বাচনে মওদুদ আহমেদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং সরকারের তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এক বছর পর ১৯৮৬ এ তাকে আবার উপ-প্রধানমন্ত্রী করা হয়। ১৯৮৮ সালে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৮৯ সালে তাকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় এবং এরশাদ তাকে উপ-রাষ্ট্রপতি করেন। ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকার জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়। জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে ১৯৯১ সালে মওদুদ আহমেদ আবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। ২০০১ সালে তিনি বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পাঁচবার মওদুদ আহমেদ নোয়াখালী জেলার কোম্পানিগঞ্জ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন।

আরও পড়ুনঃ ক্রোয়েশিয়ার জঙ্গল দিয়ে হেটে বর্ডারের দিকে যাবার পথে মাইন বিস্ফোরণে ১ জন অভিবাসী নিহত, ১০ জন উদ্ধার

ইউরোপ বাংলা

ইউরোপ বাংলা

একজন ফ্রিল্যান্স রাইটার, ব্লগার, এডুকেশনাল কনসালট্যান্ট, ক্যারিয়ার কাউন্সিলর, উদ্যোক্তা।

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা