Saturday, মে ৪, ২০২৪

বিদেশি বন্ধুদের সমর্থন চেয়ে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি: সেতুমন্ত্রী

ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : বিএনপি ‘মিথ্যা’ তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে বিদেশিদের কাছে যে পক্ষপাতিত্বমূলক সমর্থন চেয়েছিল, সেটাও ‘ব্যর্থ’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।বলেন, ‘বিদেশিরা বলছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না।’ শুক্রবার বিকালে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং আমেরিকার প্রতিনিধিরা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ প্রত্যাশা করেছেন। অংশগ্রহণমূলক কোনো নির্বাচনের কোনো কথা তারা বলেননি। আমাদের এখানে বিদেশিরা এসেছেন। সবাই যে শুধু নির্বাচনের জন্য আসছেন, সেটা কিন্তু না। তারা প্রথমে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গেছেন। এরা আসার আগে বিএনপি তাদের অপপ্রচারের মাধ্যমে যে আশঙ্কা, যে ধারণাটা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল, এবার আর সরকারের উপায় নাই। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আমেরিকার প্রতিনিধিরা সরকারকে বিপদে ফেলবে। নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আসবে। হয়ত সরকারকে বলে দেবে, এভাবে নির্বাচন করো। পার্লামেন্ট ভেঙে যাবে। জনমনে একটা ধারণা ছিল, কিন্তু না।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ইইউ প্রতিনিধি দল বলছে কোনো দলের জন্য তারা আসেননি। তাদের ভাষ্য হলো একটা সুষ্ঠু, অবাদ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার। বন্ধু দেশ হিসেবে তারা বলেছে। ভিসা নীতি আসবে, এ ধরনের কোনো উক্তি তারা করেননি। সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা তারা বলেছেন। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষয়ে তারা কিছু বলেননি। এটাই ছিল তাদের বক্তব্যের মূল কথা।

বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি যে উদ্দেশ্য নিয়ে দেশের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছিল তা ব্যর্থ হয়ে গেছে। বিএনপি মিথ্যা তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে বিদেশিদের কাছে যে পক্ষপাতমূলত সমর্থন চেয়েছিল, সেটাও ব্যর্থ হয়েছে। বিদেশিরা বলছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে না। দেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে সেটা তারা দ্বিমত করেনি।

বিএনপির আন্দোলন ব্যর্থ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আসলে কী করবে কয় দফা দাবি দিবে সেটা নিয়ে তারা এখন গোলেমালে আছে। তাদের দাবি কয়টা তাও তারা জানে না, দল কয়টা সেটাও জানে না। এবার দেখলাম ৫৪ টা, আবার ৩২টা। রাষ্ট্র মেরামতের জন্য ২৭ দল। কাদের বলেন, বিএনপির আসলে চিত্রটা বুঝে গেছে। তারা সেই ডিসেম্বর থেকে যে তোড়জোড়, গণঅভ্যুত্থান। এখন তো এটাই হলো বাস্তবতা- গণঅভ্যুত্থান থেকে পদযাত্রা। তার মানে তাদের কতটা অবনতি হয়েছে৷ তাদের কর্মকাণ্ডে নেতাকর্মীরা হতাশ।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি এক দফার যে হাক ডাক দিল, নেতাকর্মীদের বুঝাতে চাইলো, এবার সরকার পতন৷ কিন্তু তাদের ডাকে হালো পানি পেলো না। এরপর আবার তারা পদযাত্রায় গেলো। তাদের যে শক্তি সমাবেশ দরকার, তা তারা করতে পারছে না। এর মূল কারণ হচ্ছে, এর কৃতিত্ব পুরোটা একজন ব্যক্তির তিনি হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার জনপ্রিয়তা বিরোধিদলের ভয়ের কারণ। তারা এই জনপ্রিয়তাকে ভয় পায়।ওবায়দুল কাদের বলেন, যেকোনো সময়ের চেয়ে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী। আমাদের সংগঠনগুলো আগের তুলনায় অনেক সংগঠিত হয়েছে। নিজেরা নিজেদের যে শক্তি আছে, তা নিয়ে সমাবেশ করছে৷ সবাই ঐকবদ্ধ আছে। আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ পরাজিত করতে পারে না।

নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের কর্মসূচির কথা জানি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এক জাত কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এসব কর্মসূচি সম্পৃক্ত করা হয়েছে সহযোগী ও ভাতৃপতি সংগঠনগুলোকে। আমাদের ফোকাস হচ্ছে শোকের মাস। আগস্ট মাসের আর বেশি সময় বাকী নাই। এ মাস পর আগস্ট মাস। শোকের মাসের আমাদের কর্মসূচি মোটামুটি আমরা সবাই জানি। সেপ্টেম্বর মাস নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা পর্যন্ত, আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে সতর্কতার সাথে রাজপথে আছি, থাকব। এটা হলো অভিন্ন কর্মসূচি। আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রয়োজন। সে পরিবেশ আমরা রক্ষা করব।

তিনি বলেন, আমাদের আওয়ামী লীগের উদ্যোগে যে সমাবেশ এ সাবেশের শিরোনাম হবে- ‘শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ’। এই শিরোনামে আমাদের বিভিন্ন সমাবেশ। আগস্ট মাসে তিনি ব্যাপকভাবে সমাবেশ হবে?আমাদের সেখানে প্রস্তুতির বিষয়টা জানাতে চাই। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, কারও কোনো প্রকার খারাপ আচরণের জন্য নির্বাচনের পরিবেশ যেন নষ্ট না হয়, এটা আপনাদের বলে দেয়া প্রয়োজন।

আমাদের আচরণে আমরা একটি দায়িত্ব শীল রাজনৈতিক দল, তার প্রমাণ জনগনের সামনে রাখতে হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা এমন কিছু করব না, যাতে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। আর জনগন যেন মনে না করে, আমরা সংঘাতের কোনো উস্কানি দিচ্ছি। আমরা জেতা দল, আমরা জিতব ইনশাআল্লাহ। কয়েকটা মাস আমাদের ধৈর্য্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দিতে হবে। তিনি বলেন, আগস্ট মাস আসছে, কৃষক, শ্রমিক ছাত্র সমাবেশ করতে পারে। যুবলীগ যেটা শুরু করেছে, সেটা কন্টিনিউ করুক। বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে দূরত্ব দেখা গেছে, যা সমাধানের তাগিদ দেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, কোনো গ্যাপ থাকলে আলোচনা করে দূরত্ব ঘোচাতে হবে।

ওবায়দুল কাদের জানান, শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের প্রথম ধাপ শুরু হচ্ছে আগামী ১৮ জুলাই। এদিন মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইন্সটিটিউট থেকে বঙ্গবন্ধু ভবন পর্যন্ত শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে৷পরদিন ১৯ জুলাই ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সাত রাস্তা থেকে মহাখালি পর্যন্ত শোভাযাত্রা করবে৷এ সব কর্মসূচিতে বিএনপির কর্মসূচির সঙ্গে যেন মুখোমুখি না হওয়ার নির্দেশনা দেন।

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা