ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, জেলখানায় থাকা কয়েদিদের ৬০ শতাংশের কাছাকাছি মাদক কারবারি ও মাদক সেবনকারী। সাক্ষী-প্রমাণের অভাবে মাদক ব্যবসায়ীরা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে। ছাড়া পেয়ে আরো বেশি করে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে।
আজ শনিবার মুন্সীগঞ্জের আলমপুরে আন্তর্জাতিক মানের স্পেশালাইজড মাদকাসক্তি ও মানসিক হাসপাতাল আহ্ছানিয়া হেনা আহমেদ মনোযত্ন কেন্দ্র উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘আমরা যদি উন্নত বাংলাদেশ গড়তে চাই, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই, তাহলে যুবসমাজকে এই মারণনেশা থেকে বাঁচাতে হবে। সে জন্য জনপ্রতিনিধিসহ সবার সহযোগিতা চাই।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি পৃথিবীর বহু দেশ ঘুরেছি। প্রাথমিকভাবে ইউরোপের খুব ভয়ংকর অবস্থা ছিল।
কিন্তু তারাও আজ ভালো অবস্থানে চলে এসেছে। আমি, জানি বাংলাদেশ এখনো সেই পর্যায়ে যায়নি। আমাদের ৭০-৮০ লাখ মানুষ হয়তো মাদকদ্রব্য ব্যবহার করেছে। সে তুলনায় হাসপাতাল (মাদক নিরাময় কেন্দ্র) খুবই অপ্রতুল। তবু আমরা শুরু করেছি।’ মন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘মাদক নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি। মিয়ানমার সীমান্ত সুরক্ষিত করতে কাজ অব্যাহত রয়েছে। বিজিবিকে শক্তিশালী করা হয়েছে। সীমান্তে যোগাযোগের জন্য হেলিকপ্টার কেনা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সভাপতি কাজী রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে বিক্তৃতা করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবদুল ওয়াহাব ভূঞা, বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুন্সীগঞ্জ কাজী নাহিদ রসুল, পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান আল-মামুন, মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রের আবাসিক মনোচিকিৎসক ড. মো. রাহেনুল ইসলাম, হাঁসাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সুলাইমান খান, শ্রীনগর উপজেলা চেয়ারম্যন মো. মশিউর রহমান মামুন, আহ্ছানিয়া মিশন নারী মাদকাসক্তি চিকিৎসা কেন্দ্রের ইয়ানা জামান ও অভিভাবক রেবেকা জামান প্রমুখ।
ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন প্রতিষ্ঠিত মনোযত্ন কেন্দ্র মাদক নির্ভরশীল ও মানসিক রোগীদের বহুমুখী বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা প্রদান করবে। পাঁচ তলাবিশিষ্ট কেন্দ্রটিতে রয়েছে ৫০টি বেড, খোলামেলা পরিবেশ, কেবিন, ডিলাক্স শয্যা, অ্যাসেসমেন্ট, একক ও গ্রুপ কাউন্সেলিং সুবিধা, মেডিটেশন, কেস ম্যানেজমেন্ট, লাইব্রেরি, শরীর চর্চার জন্য জিম, ধর্মচর্চার ব্যবস্থা, অ্যাম্বুল্যান্স, পারিবারিক কর্মসূচি, চিকিৎসা-পরবর্তী ফলোআপ সুবিধা। এ ছাড়া ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন পরিচালিত পার্শ্ববর্তী হেনা আহমেদ হাসপাতাল থেকে এক্স-রে, অত্যাধুনিক সব ডায়াগনস্টিক, আল্ট্রাসনোগ্রাম, আধুনিক মানের অপারেশন থিয়েটার ও জরুরি চিকিৎসাসেবার সুবিধাও রাখা হয়েছে।