Friday, মে ৩, ২০২৪

সিলেটে বড় বন্যার শঙ্কা, প্রস্তুতির নির্দেশ

ইউরোপ বাংলা ডেস্ক : সিলেটে গত দুইদিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আগামী ১০ দিনে সিলেটে অতি বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে। বিভাগের নদীগুলোতে পাহাড়ি ঢলেরও শঙ্কা রয়েছে। আগামীকাল (১৬ জুন) থেকে পরবর্তী ১০ দিনে বিভাগে ৬০০ থেকে ৯০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয় আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, আগামী ১৬ থেকে ২৫ জুনের মধ্যে সিলেট বিভাগের নদীগুলোতে পাহাড়ি ঢল ও বন্যার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।

পলাশ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার দিন শেষে সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী স্থানের নদীগুলোতে পাহাড়ি ঢল নামা শুরু হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ১৬ জুন থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত ১০ দিনে সিলেট বিভাগের উপর ৫০০ থেকে ৯০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা নির্দেশ করছে আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো।’ এদিকে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিলেটে বন্যা দেখা দেওয়ার শঙ্কায় আগামী প্রস্তুতি নিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসন।

বৃস্পতিবার (১৫ জুন) বিকেল ৩টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা’ হয়।
সভায় সিলেটে সিটি করপোরেশন, সিলেট মহানগর পুলিশ, জেলা পুলিশ, ফায়ার ও সিভিল ডিফেন্স এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে জেলা প্রশাসক মজিবুর রহমান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘সিলেটে গত কয়েকদিন ধরে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ১৫ দিন সিলেটজুড়ে অতিবৃষ্টি হবে।

এ সময়ে সিলেটে এক হাজার ৪০০ মিলিমিটারের বৃষ্টিপাত হতে পারে। ফলে সিলেটে বন্যার সমূহ শঙ্কা রয়েছে।’ বন্যার ক্ষয়ক্ষতির কমাতে আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সে লক্ষ্যে বৃস্পতিবার জেলার সমস্ত উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেছি। সকলের কাছ থেকে নিজ নিজ উপজেলার পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হয়ে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।’ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যানদের বরাত দিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘নদী সংবলিত উপজেলাগুলোর নদীতে গত কয়েকদিনে পানি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

তবে এখনো নদীর পানি কোনো পয়েন্টেই বিপদসীমার ওপরে ওঠেনি। তারা (নির্বাহী কর্মকর্তা ও চেয়ারম্যান) জানিয়েছেন, নিজ নিজ উপজেলায় নগদ অর্থ ও চাল মওজুদ আছে। তবে তা পর্যাপ্ত নয়।’ তাদের নতুন করে চাহিদা পাঠাতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসনে পর্যাপ্ত চাল ও নগদ অর্থ মওজুদ রয়েছে। চাহিদামতো উপজেলাগুলোতে পাঠানো হবে।’

জেলার যেসব উপজেলায় পাহাড়ের পাদদেশে মানুষের বসবাস রয়েছে সেসব স্থানে অবস্থা বিবেচনায় দ্রুত তাদের সরিয়ে নিতে প্রস্তুত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনকেও নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। গত বন্যার অভিজ্ঞতা থেকে এবার তিন থেকে চার লাখ টাকা করে স্ট্রিলের দুটি বড় নৌকা ক্রয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলা প্রশাসন। কারণ গত বছরের দফায় দফায় বন্যায় নৌকার সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করে।

জেলা প্রশাসক আরো জানান, গত বছরের বন্যার সময় তৈরি করা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোকে আবারো প্রস্তুত করা হবে। এ লক্ষ্যে কেন্দ্রের তালিকা নতুন করে তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে সিলেট মহানগর এলাকায় নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রের জন্য গতবারের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে কয়েকটি পরিবর্তন করা হতে পারে।

Related Posts

Next Post

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

I agree to the Terms & Conditions and Privacy Policy.

ফেসবুকে ইউরোপ বাংলা